একটি অধ্যায়ের অবসান। সবুজ মেরুন ছাড়লেন মোহনবাগান অধিনায়ক প্রীতম কোটাল। হুগলির উত্তরপাড়ার প্রীতম এবার পাড়ি দিতে চলেছেন কেরলে। সই করলেন আইএসএল-এর অন্যতম সফল ক্লাব কেরালা ব্লাস্টার্সে।
চিরাগ ইউনাইটেড থেকে যাত্রা শুরু প্রীতমের। তারপর পৈলান অ্যারোজ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় ফুটবল দলের জার্সিতে মাঠে নামা। ২০১৩-১৪ মরশুমে প্রথম মোহনবাগানে সই করেন ২৯ বছর বয়সী এই বাঙালি রাইটব্যাক।
সবুজ মেরুন জার্সিতে তাঁর প্রথম গোল, ২০১৫ সালে পুনে এফসির বিরুদ্ধে। তবে শুধু মোহনবাগানই নয়, দিল্লি ডায়নামোস, পুনে সিটি এফসি এবং এটিকে-র হয়েও খেলেছেন এই বাঙালি ডিফেন্ডার। তবে নিজের পেশাদার ফুটবল জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই তাঁর কেটেছে সবুজ মেরুনে।
মোহনবাগানের প্রতি তাঁর আবেগ এবং ভালোবাসা বারবার ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। ডার্বি জয়ের পর টিম বাসে তাঁর গলায় মোহনবাগানের গান সবুজ মেরুন সমর্থকদের উজ্জীবিত করেছে। দীর্ঘদিন দলকে ১০০% সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন এই প্রীতম। শেষ আইএসএল জয়ও তাঁর অধিনায়কত্বেই। এককথায় ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রীতম জিতেছেন একাধিক ডার্বি। মোহনবাগান জার্সিতে আইএসএল জয় ছাড়াও, আই লিগ এবং ফেডারেশন কাপেও বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন এই বঙ্গ ডিফেন্ডার। সবুজ মেরুন জার্সিতে মাঠে নেমেছেন এএফসি কাপের ম্যাচেও। অনূর্ধ্ব-২৩ ভারতীয় ফুটবল দলেও খেলেছেন চুটিয়ে। বর্তমানে সিনিয়র দলের স্কোয়াডে নিয়মিত সদস্য। ইগোর স্টিমাচের অন্যতম বড় ভরসার নাম প্রীতম কোটাল।
গত মরশুমে মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন মোট ২৪টি ম্যাচ। পরিসংখ্যান বলছে, ১১৩৮টি পাস, গড় পাসিং অ্যাকিউরেসি ৭৮.৬৪%, ৫১টি ট্যাকল, ৪৮টি ইন্টারসেপশন, ৭২টি ক্লিয়ারেন্স এবং ২৭টি ব্লকিং রয়েছে তাঁর নামের পাশে।
তবে পেশাদার ফুটবলারদের জীবন কখনোই থেমে থাকে না। তাই এবার সবুজ মেরুনের ঘরের ছেলে পাড়ি দিচ্ছেন কেরলে।
শেষবেলায় তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে আবেগঘন পোস্ট করলেন প্রীতম কোটাল নিজেই। তিনি লিখছেন, “একসাথে বেঁধে থাকা এতগুলো বছর। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে নতুন করে পাওয়া। সবকিছুই আমার সঞ্চয়কে আরও পরিপূর্ণ করেছে। তবে আপাতত মোহনবাগানের হয়ে খেলা শেষের বাঁশি বেজে গেছে। বলতে দ্বিধা নেই, নিজেকে উজাড় করে দিয়ে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। আসলে কী জানেন তো, বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের পা থেকে বল কাড়ার তুলনায় সবুজ মেরুনের মায়া কাটানো সত্যি একটু কঠিন ।“
Comments :0