Sayandeep Mitra

ভোটকে বোমা গুলির লড়াইয়ে পরিণত করতে চাইছে তৃণমূল: সায়নদীপ মিত্র

জেলা

Sayandeep Mitra


দীপশুভ্র সান্যাল- জলপাইগুড়ি


তৃণমূল বলছে তারা ভোটে হারলে সমস্ত সামাজিক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বলছি বামপন্থীরা ভোটে জিতলে সমস্ত সামাজিক প্রকল্পের আওতায় আরো কত বেশি সংখ্যক প্রকৃত গরিব মানুষকে আনা যায় কিভাবে প্রকল্প গুলির বিস্তার ঘটানো যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। বাস্তু ঘুঘুদের পঞ্চায়েত থেকে তাড়িয়ে পুনরায় পঞ্চায়েতে গরিব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিন ধরে চলা নির্বাচনী প্রচার সভায় সিপিআই(এম) প্রার্থীদের নিয়ে প্রচার অভিযানে জলপাইগুড়িতে হাজির ছিলেন প্রাক্তন যুব নেতা সিপিআই(এম)’র রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের শুভচনীপাড়া বুথের ক্যাম্পের হাট এলাকার হাট সভায় কথাগুলি বলেন তিনি। 


সদর ব্লকের খরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জলপাইগুড়ি মিউনিসিপ্যালিটির ৩ নম্বার ওয়ার্ড সংলগ্ন তিস্তা পারের সুকান্তনগর কলনি এলাকার তিনটি বুথের সিপিআই(এম) প্রার্থী গোসাই সরকার, নারায়ন রায় ও ললিত দত্ত (শুভ)’র সমর্থনে তিস্তার চর এলাকায় সংগঠিত পদযাত্রায় পা মেলান তিনি। সেখানে তিনি বলেন, তৃণমূলের মধ্যে বিজেপি খুঁজতে ইডি সিবিআই লাগবে না। কারণ তৃণমূল আরএসএসের মস্তিষ্ক প্রসূত ফসল। আর তৃণমূলের বিরোধিতায় বিজেপি, বিজেপির বিরোধিতার তৃণমূলের হাত ধরলে মানুষ ভুল করবেন। এটা আমাদের কথা নয় বর্তমান তৃণমূল বিজেপির নেতা মুকুল রায় বলেছেন ভারতীয় জনতা পার্টি তো আসলে তৃণমূল কংগ্রেস। 
নর ব্যান চা বাগানের পরেশনগর বুথ ও সবশেষে মন্ডল ঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌলভী পাড়া বুথের সিপিআই(এম) প্রার্থীদের সমর্থনে বৈঠকী সভায় বক্তব্য রাখেন সায়নদীপ মিত্র।  অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য কৌশিক ভট্টাচার্য, বেরুবারি লোকাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক, সদর দক্ষিণ-পশ্চিম এরিয়া কমিটির সদস্য হাশিফুল হক সহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

মিত্র বলেন,  ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচন আর ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্যে আসমান জমিন ফারাক রয়েছে। ২০১৮ শাসক দলের হাত কাটা নুলো, কান কাটা ভুলোরা ভোট লুট করেছিল আর এবার ভোট লুট করতে আসলে গ্রামের মানুষ তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল পাঠাবেন। 
তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত হয়ে উঠেছিল গোটা দেশের কাছে মডেল। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কিভাবে গরিব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় গোটা দেশ তথা পৃথিবীর কাছে তা ছিল শিক্ষণীয়। দেশ বিদেশ থেকে বিভিন্ন অতিথিরা এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কার্যকলাপ সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে। আর তৃণমূল জমানায় সেই পঞ্চায়েত লুঠের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। শাসক দলের নেতারা গরীব মানুষকে ঘর থেকে বঞ্চিত করে নিজের দোতলা তিনতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অন্যের ভাঙ্গা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে নিজেদের নাম আবাস যোজনার লিস্টে ঢুকিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘ ২২ মাস ধরে গরিব মানুষ ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছেন না, গ্রাম পঞ্চায়েতের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, পানীয় জলের চরম সংকট চলছে গ্রাম বাংলা জুড়ে। 


শাসক দল তৃণমূল পঞ্চায়েতের ভোটকে বোমা গুলির লড়াইয়ে পরিণত করতে চাইছে আর কেন্দ্রের শাসক দল ২০১৪ সালের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিভেদের রাজনীতি কায়েম করে নকল তৃণমূল বিরোধিতার ভেক ধরে বামপন্থীদের শক্তিকে দুর্বল করতে চাইছে। জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া, কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না, উত্তরবঙ্গের  টমেটো, লঙ্কা চাষিরা দাম না পেয়ে রাস্তায় ফসল ছিটিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, হিমঘরের আলুর বন্ড কৃষকের হাতে না পৌঁছে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, চা চা শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি আদায় হচ্ছে না। অথচ করনার সময় বিজেপির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা তাদের সম্পত্তির পরিমাণ বাড়িয়েছে কয়েক গুণ।
দুদিনের সভায় সায়নদীপ মিত্র ছাড়াও ছিলেন সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক মন্ডলী সদস্য অমূল্য রায়, যুব নেতা অহিদুল ইসলাম, পার্টি নেতা ইসমাইল হক জেলা পরিষদ প্রার্থী বেবি রায় বর্মন সহ পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা।

Comments :0

Login to leave a comment