FARMERS PROTEST

ফের অবরোধে আলুচাষীরা

রাজ্য জেলা

চিন্ময় কর- পশ্চিম মেদিনীপুর

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আলুর দাম প্রতি কেজি ৯ টাকা ঘোষণা করলেও আজ ১৩ দিনেও সেই দর আলুচাষীরা পাচ্ছেন না। ৭ থেকে ৮ টাকা দর উঠলেও কেবল বাছাই আলু কেনা হচ্ছে। বিঘা প্রতি কৃষকদের ক্ষতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। প্রতিকারে আলুর প্রতি কেজি ১৩ টাকা মূল্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে ফের ১২ দিনের মাথায় জেলার আলু চাষীরা সড়ক রাস্তায় আলু ঢেলে অবরোধ বিক্ষোভে সামিল হলেন। 
বৃহস্পতিবার সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের ডাকে চন্দ্রকোনা টাউনের চৌমাথার মোড় গাছশীতলতে সহস্রাধিক আলু চাষী বিক্ষোভ মিছিল করে সড়ক রাস্তায় আলু ঢেলে অবরোধ বিক্ষোভে সামিল হোন। এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা।
সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মেঘনাদ ভূঁইয়া বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় কৃষকরা সংযত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমমেদিনীপুর জেলার গড়বেতা, গোয়ালতোড় ও ক্ষীরপাই এই তিনটি স্থানে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন কৃষকেরা। কৃষক বিক্ষোভের চাপে সেদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন চাষীরা প্রতিকেজি ৯ টাকা দরে আলু বিক্রি করবে সেই ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বিক্ষোভকারী কিষকদের অভিযোগ সেদিন ঘোষণা করে এখনও সরকার নীরব। ফড়েদের নিয়ন্ত্রণে বাজার এখন। সেই ঘোণার পর কৃষক প্রতি কেজি আলু ৮ টাকা দর পেয়েছে কেবল বাছাই ফ্রেশ আলুর বিনিময়ে। এখন আরও আলু জমি থেকে তোলার সময়। আর হঠাৎ করে সেই দাম প্রতি কেজি ৭ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। 
বিক্ষোভকারী এক কষক বলেন, ‘‘এবছর আলু উৎপাদন ভালো হলে বিঘাপ্রতি খরচ ৩২-৩৫ হাজার টাকা। বিঘায় আলু হয়েছে ৭৫-৮০ প্যাকেট অর্থাৎ ৩৬-৪০ কুইন্টাল। ফ্রেশ আলু কেনা হলেও মাঝারি ও ছোটো সাইজের আলুর দাম আরো কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকরা। অভাবী বিক্রিতে এখন ক্ষতি হচ্ছে বিঘা প্রতি ১২-১৫ হাজার টাকা।
এদিন রাস্তায় আলু ঢেলে অবরোধ বিক্ষোভের জেরে একাধিক সড়ক রাস্তায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে। অবরোধ বিক্ষোভের আগে তিন কিলোমিটার বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা চন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সম্পাদক চিত্ত পাল এবং কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মেঘনাদ ভূঁইয়া।  কৃষক নেতৃত্ব বলেন,  এই মহুর্তে জেলার আলু চাষীদের কাছে সরকার না দাঁড়ালে কৃষকরা কোথায় যাবেন। এই জেলার সাতটি ব্লকে ব্যাপক পরিমান আলু চাষ হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বে জেলায় প্রর্যন্ত ১২৯ জন আলুচাষী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ও দাম না পেয়ে সর্বশান্ত হয়ে। আমরা কৃষকদের সামিল করছি আত্মহত্যা নয়, আসুন অধিকার রক্ষার লড়াইতে একজোট হই। বিভাজনের রাজনীতিকে রুখে দিয়ে সেই আন্দোলন শক্তিশালী করার মধ্যে কিষান মোর্চার আন্দোলন যেমন কর্পোরেটের স্বার্থরক্ষায় বিজেপি সরকারের কৃষক মারা কৃষি আইন রুখে দিয়েছে, আমাদের রাজ্যেও সেই আন্দোলনকে শক্তিশালী করি।

Comments :0

Login to leave a comment