পঞ্চায়েত নির্বাচন আসতেই গ্রামে গ্রামে শুরু হয়ে গেছে ভুয়ো মাইক্রো ফিন্যান্স কর্মীদের আনাগোনা। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের হাত ধরে গ্রামে ঢুকছে তারা। বাড়ি বাড়ি এসে মহিলাদের মাইক্রো ফিন্যান্স টাকা রাখার প্রলোভন দেখাচ্ছে ভুয়ো সংস্থাগুলো। সারদার মতো সরাসরি নয়, পদ্ধতিতে একটু পরিবর্তন এসেছে।
একরকম জোর করেই তৃণমূল নেতা বা তার পরিবারের কোনও সদস্যর স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যুক্ত করে সেই গোষ্ঠী থেকে ঋণ নিয়ে আমানত জমা করতে হবে মাইক্রো ফিন্যান্সে। প্রলোভন বাড়ির শিক্ষিত ছেলে বা মেয়েকে চাকরির প্রতিশ্রুতি। চাকরির লোভে অনেকেই পা দিচ্ছেন সেই জালে। ফলে নিজেদের অজান্তেই চড়া সুদে ঋণের জালে জড়িয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সারদা চিটফান্ডের স্মৃতি এখনও মানুষের মন থেকে ফিকে হয়ে যায়নি। এই গ্রামের সাধারণ মানুষই জমি বাড়ি বেচে টাকা রেখেছিলেন সারদায়। অল্প দিনে দ্বিগুন হয়ে যাওয়ার আশায়। সেই টাকা তো দ্বিগুন হয়নি, লক্ষ লক্ষ মানুষের কষ্টের উপার্জনের টাকা চোট হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলেছে সেই দায়। ভুগেছেন সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামে গ্রামে মাইক্রো ফিন্যান্স ও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতিদের সদস্যরা।
তৃণমূল নেতারা যে ভাবে লুট করছে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। মাইক্রো ফিন্যান্সে যেন কোনও ভাবেই টাকা না রাখেন, তার জন্য গ্রামের মহিলাদের বোঝানো থেকে তৃণমূল নেতাদের রোষের মুখেরও পড়তে হচ্ছে তাঁদের, বলেলেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এবং ভাঙড় লোকাল কমিটির সেক্রেটারি মানসী ঘোষ। গ্রামে গ্রামে মহিলাদের কোনও কাজ নেই রেগার কাজের বখরাও যাচ্ছে তৃণমূল নেতা নেত্রীদের অ্যাকাউন্টে। লক্ষীর ভান্ডার যে টাকা ঢোকে সেটাও ঘুরিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকে নেওয়া ঋণের সুদ দিতেই চলে যাচ্ছে। তাহলে মেয়েদের হাতে টাকাটাই তো থাকছে না। তিনি আরও বলেন গ্রামের মানুষের কাছে থেকে লুট করা টাকা দিয়ে ভোট করবে তৃণমূল, সব দিক থেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এর বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে মহিলা সমিতি।
এই নিয়ে সারাভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা কনীনিকা ঘোষ বোস বলেন, লক্ষীর ভান্ডার বলে নয়। সাধারণ মানুষের জন্য যে কোনও ধরনের প্রকল্প আনতেই পারে সরকার। কিন্তু তার সঙ্গে কাজ চাই। মাসে শুধু ৫০০ টাকা উপার্জনের পথ হতে পারে না। রঙ না দেখে গ্রামে গ্রামে মেধার ভিত্তিতে কাজ চাইছে মানুষ।
Comments :0