কমরেড বাসুদেব আচারিয়ার শেষকৃত্যে পুরুলিয়ায় জনজোয়ার নামল। সিপিআই(এম)’র এই প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদকে শ্রদ্ধা জানালেন অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থকরাও।
বুধবার সিপিআই(এম) পুরুলিয়া জেলা দপ্তরে প্রয়াত নেতার মরদেহে লাল পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা ও রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়। সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন বহু অংশের মানুষ।
স্বেচ্ছাসেবকরা ভিড় সামলাতে নাকাল হয়েছেন। রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে এসেছেন সিপিআই(এম)’র কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা। ঝাড়খন্ড সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক প্রকাশ বিপ্লব, প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক জি কে বক্সি সহ নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানান। ছিলেন পুত্র বেঙ্কট সৌমিত্র আচারিয়া, দুই মেয়ে জয়শ্রী আচারিয়া ও তনুশ্রী আচারিয়া।
সিপিআই(এম) বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, পার্টি পলিট ব্যুরো সদস্য ও সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্পাদক তপন সেন, সিআইটিইউ রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী, আভাস রায় চৌধুরী ও দেবলীনা হেমব্রম, পার্টি বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি সহ বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ।
শ্রদ্ধা জানান জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো, তৃণমূল রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো প্রমুখ।
এদিন বেলা তিনটে নাগাদ জেলা পার্টি দপ্তর থেকে শেষবারের মতো বের হয় কমরেড আচারিয়ার মৃতদেহ। তখন শুধু মানুষ আর মানুষ। সামনে ৮১ টি রক্ত পতাকা অর্ধনমিত অবস্থায় ধরে পথ হাটছেন পার্টিকর্মী, সমর্থকরা। শ্রদ্ধা জানান পুরুলিয়া লোকসভার সাংসদ জ্যোতির্ময় প্রসাদ সিং, পুরুলিয়ার পৌরপ্রধান নবেন্দু মাহালী।
শববাহী গাড়ি গিয়ে পৌঁছে রেল শহর আদ্রায়। কমরেড বাসুদেব আচারিয়ার বাড়ি এখানেই। শ্রমজীবী সব অংশের মানুষ আসেন। সন্ধ্যায় বেনিয়াশোল শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মহম্মদ সেলিম বলেন, তিনি ছিলেন শ্রমজীবী অংশের মানুষ। ছাত্র যুব থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন কমরেড আচারিয়া। তিনি বলেন, লোকসভায় উনি যখন দলনেতা আমি তখন সহকারী দলনেতা। লোকসভায় মেহনতী মানুষের কথা কিভাবে তুলে ধরতে হয় সেই সময় খুব কাছ থেকে দেখেছি।
তপন সেন বলেন, বাসুদেব আচারিয়া সবসময় সক্রিয় থাকতেন। আর তাঁর সক্রিয়তা ছিল শ্রমজীবী মানুষের কথা বলা। বিশ্রাম নিতে চাইতেন না। সভা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গেছেন। তবুও নিজের দায়িত্ব থেকে কখনো পিছপা হননি। তিনি বলেন দিল্লিতে দু'বছর আগে সিআইটিইউ’র সম্পাদক মন্ডলীর সভা ছিল। তার কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাসুদেব আচারিয়া। সভা শুরু হওয়ার পর জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে কমরেড আচারিয়া তার শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এরপরে এজেন্ডা ধরে মিটিং শুরু করার সময় সকলকে অবাক করে দিয়ে দেখা যায় যে কমরেড আচারিয়া অসক্ত শরীর নিয়ে হাজির হয়ে গেছেন সভায়। তিনি ছিলেন এমনই এক মানুষ। তার মৃত্যু সারা দেশের শ্রমজীবী অংশের মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি।
Com Basudev Acharia Purulia
কমরেড বাসুদেব আচারিয়ার শেষকৃত্য সম্পন্ন, বিদায় জানাতে জনজোয়ার

×
Comments :0