RATION SCAM

বালুর চিকিৎসায় আপত্তি জানালো সেনা হাসপাতাল

রাজ্য

 ‘প্রতিরক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য কমান্ড হাসপাতাল, অন্যদের চিকিৎসা করলে সমস্যা তৈরি হয়। চাপ বাড়ে।’ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধৃত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কমান্ড হাসপাতালে বারংবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাওয়া নিয়ে বুধবার এমনই খেদোক্তি প্রকাশ করল কমান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 
কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কমান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে। সেখানে বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করতেও বলেছে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। এসবের ভিত্তিতে বুধবারেই নিজেদের সমস্যার কথা হাইকোর্টে পেশ করল আলিপুরের কমান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। 
প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুকে গ্রেপ্তারির পর কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হয়। সেখানে বিচারপতি তনুময় কর্মকার নির্দেশ দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমান্ড হাসপাতাল মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে এবং মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তাই করতে হবে।  
কিন্তু বারেবারে ধৃত মন্ত্রীকে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জেরে সেখানে চিকিৎসায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অন্য রোগীরা চিকিৎসা করাতে এসে সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন। আর এর জেরেই বুধবার নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলো সেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।   
শুক্রবার গ্রেপ্তারির পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সোমবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ধৃত মন্ত্রীকে নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার পর বাধ্যতামূলক শারীরিক পরীক্ষার জন্য আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালকে আগেই বেছে নিয়েছিল ইডি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা কমান্ড হাসপাতালে করার জন্য একইভাবে আবেদন করেছিল ইডি।
বালুর ক্ষেত্রে নিম্ন আদালত মান্যতা দিলেও পার্থকে সে সুযোগ দেয়নি হাইকোর্ট। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যাবতীয় চিকিৎসা করছে জোকার ইএসআই হাসপাতাল। আর সেই ভরসাতেই বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে শরণাপন্ন হলো সেনা হাসপাতাল। তাদের একটাই যুক্তি প্রতিরক্ষার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে গিয়ে আগামীদিনে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে আদালতের উপযুক্ত নির্দেশ পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কমান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল হাইকোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। এর আগে বিষয়টি নিয়ে বার দুয়েক কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আরজি জানায় কমান্ড হাসপাতাল। কিন্তু সেনা হাসপাতালের তরফে করা ওই  আরজি খারিজ করে দেয় ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। শুনানি চলাকালীন এজলাসের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া বনমন্ত্রীকে বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষার পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর দফায় দফায় জেরা করে ইডি। 
মন্ত্রীর প্রথম দফার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় কমান্ড হাসপাতালে। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে ফের সল্টলেক সিজিও’তে ফিরে গেছিল ইডি’র গোয়েন্দরা। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের গেট দিয়ে বের করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে নিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা।
দেড় ঘণ্টা ধরে চলে এদিনের তাঁর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা। আদালতের নির্দেশ রয়েছে একদিন অন্তর বালুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে ইডিকে। তাই বৃহস্পতিবার যদি মামলাটি আদালতে ওঠে, তবে কী নির্দেশ দেয় আদালত সেদিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ইডি’কে।

Comments :0

Login to leave a comment