Surya Mishra

মানুষের লড়াই সংগ্রামের হাতিয়ার লাল ঝান্ডা, খেতমজুর সম্মেলনে সূর্য মিশ্র

রাজ্য

Surya Mishra হেঁড়িয়াতে প্রকাশ্য সমাবেশে সূর্য মিশ্র

সারা ভারত খেত মজুর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২য় সম্মেলন প্রকাশ্যে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শনিবার। হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ বিদ্যালয়ের মাঠে বিকেল তখন ৩ টে। লাল ঝান্ডা, লাল বেলুন, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সভা স্থলের দক্ষিণে দীঘা রাস্তা, পূর্বে খেজুরী রাজ্য সড়ক, উত্তরে কলকাতা থেকে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক, পশ্চিমে মাধাখালি রাজ্য সড়ক লাল ঝান্ডার মিছিল প্রবেশ করে। মিছিলে শ্লোগান ছিল চোরে সরকার তাড়িয়ে সচ্ছ গ্রামপঞ্চায়ের গড়তে হবে, ১০০ দিনের কাজ দিন করতে হবে, তৃণমূলের দূর্নীতি রুখতে মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। কৃষকের ফসলের দাম চাই, সার ঔষুধের দাম কমাতে হবে। সভা মঞ্চে তখন উপস্থিত খেতমজুর কৃষক শ্রমিক নেতৃত্ব। প্রকাশ্য সমাবেশে  সভাপতিত্ব করেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়নের সভাপতি আসিষ প্রামানিক।

 

হেঁড়িয়ায় সূর্য মিশ্রের জনসভার দিকে মানুষের মিছিল


সম্মেলন উপলক্ষে হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সূর্য মিশ্র বলেন "সরকার গড়ার জন্যই শুধু লাল ঝাণ্ডার জন্ম হয়নি। গরিব কৃষিজীবী, শ্রমজীবী, খেতমজুর মানুষ, শিক্ষক, ছাত্র, যুব, মহিলা, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সহ সমাজের সমস্ত অংশের মানুষের অধিকারের দাবি নিয়ে প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রামের হাতিয়ার লাল ঝান্ডা।"
তিনি মনে করিয়ে দেন "ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে পরাধীন ভারতবর্ষে গরীব সাধারণ গ্রামের মানুষজন তাদের জীবন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে এই লাল ঝান্ডা হাতে নিয়েই তেভাগার আন্দোলনে সামিল হয়েছিল। এই খেজুরি সহ অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার কৃষক আন্দোলন স্বাধীনতা আন্দোলনে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। বর্তমান সময়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলি সাধারণ মানুষ মেনে নেবেন না। সেদিন আর বেশি দুরে নেই, যেদিন লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে এরাজ্যের মানুষ পরাধীন ভারতবর্ষের মতো এই দুই স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধেও ঐক্যবদ্ধ হবেন।"

 


এদিন প্রকাশ্য জনসভায় সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র বলেন, কেন অপনারা বিজেপি করবেন? যাদের বিশ্বের ধনীদের সঙ্গে যোগ। যারা পুঁজিবাদী, ধনীদের, শিল্প পতিদের নিয়ে কাজ কারবার করে। এই বিজেপি তৃণমূল জোট বেঁধে মালিক- শ্রমিকের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য নষ্ট করে পুঁজিবাদীদের পক্ষ অবলম্বন করে। কেন্দ্র রাজ্য দুই সরকার শ্রমিক কৃষক বিরোধী। মিশ্র বলেন , বিশ্বের ২ নং ধনী ব্যাক্তি আদানি যাকে বিজেপি সরকার ১২ লক্ষ কোটি টাকা লোন দিয়েছে। যে টাকা সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখে। সরকার এদের মতো ধনীদের ঋণ মুকুব করছে। আর গরীব কৃষক সাধারণ মানুষ ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সরকার ব্যাঙ্ক, ইনসিওরেন্স সব লাটে তুলে দিচ্ছেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকার তাজপুর বন্দর বানাবে  আদানির সহযোগীতায়। জলের গভীরতা কম। কলকাতা , হলদিয়ায় জাহাজ ঢুকতে পারছে না। এদিন সিঙ্গুর প্রসঙ্গে মিশ্র বলেন, ওরা শিল্প করতে দেয়নি। তাজপুরে শিল্প গড়লে জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছুক  অনিচ্ছুক কৃষকরা থাকবেন। তিনি বলেন, বিকল্প সরকার গড়তে হবে যা জ্যোতি বসু বলেছিলেন, রাইটার্স বিল্ডিং এ থেকে সরকার চালানো যাবে না। মানুষের সরকার গড়তে হবে। সূর্য মিশ্র বলেন , গ্রামে বিকল্প সরকার গড়তে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে।

 


এদিনের সমাবেশে সিআইটিইউ’র সর্ব ভারতীয় নেতৃত্ব অনাদি সাহু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, বিশ্বে ক্ষুধার্তের তালিকায় ভারত তলানিতে। পুঁজপতিদের সঙ্গে শ্রমিকের অধিকারের আন্দোলনকে প্রতি নিয়ত ভাঙতে চাইছে সরকার। এদিনের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, খেত মজুর ইউনিয়ানের রাজ্য সভাপতি তুষার  ঘোষ ,অমিয় পাত্র ,নিরঞ্জন সিহি, হিমাংশু দাস প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
 

Comments :0

Login to leave a comment