MP Salaries

সাংসদদের বেতন ২৪% বাড়ালো মোদী সরকার

জাতীয়

মুদ্রাস্ফীতির কথা মাথায় রেখে সাংসদদের বেতন একলাফে ২৪ শতাংশ বাড়িয়ে দিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সোমবার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর হবে। দেশের প্রান্তিক, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত অংশের খেটে খাওয়া মানুষ প্রতিদিন এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করে দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাঁদের দুর্দশা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকার সাংসদদের বেতন মাসে ১ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াকেই সহজ বলে মনে করেছেন। সাংসদরা এমনিতেই বিদ্যুৎ, মেডিক্যা ল, পানীয় জল, ফোন, ইন্টারনেট সহ বিভিন্ন পরিষেবায় বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিমান, ট্রেন টিকিটে বিরাট ছাড় পান। মধ্য দিল্লিতে তাঁদের জন্য বরাদ্দ থাকে ফ্ল্যাট, বাংলো। জীবনধারণের মৌলিক ক্ষেত্রগুলিতে এই বিপুল পরিমাণ সুবিধা পাওয়ার পরও তাঁদের বেতন বৃদ্ধির যুক্তি হিসাবে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে ‘ব্যয় মুদ্রাস্ফীতি সূচকের ভিত্তিতে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কেন্দ্রের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের তরফে এই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, বর্তমান সাংসদদের দৈনিক ভাতা এবং প্রাক্তন সাংসদদের পেনশন বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে যাঁরা সংসদের দুই কক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁদের পেনশন প্রতি বছরের হিসাবে নির্দিষ্ট হারে বাড়বে। আগে সাংসদরা দৈনিক ভাতা বাবদ ২০০০ টাকা করে পেতেন, এপ্রিল থেকে তা বেড়ে হবে ২৫০০ টাকা। সংসদের অধিবেশনে এবং সংসদ বিষয়ক কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থেকে সেই ভাতা তাঁরা তুলতে পারবেন। প্রাক্তন সাংসদরা এতদিন মাসে ২৫ হাজার টাকা পেনশন পেতেন। নতুন নিয়মে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩১ হাজার। পাঁচ বছর বা তার বেশি মেয়াদে যাঁরা সাংসদ থেকেছেন, তাঁদের অতিরিক্ত মাসে ২ হাজার থেকে বেড়ে আড়াই হাজার হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাংসদদের বেতন পঞ্চাশ হাজার থেকে একেবারে দ্বিগুণ করে দিয়েছিলেন। তিনি একটি পরিকাঠামো তৈরি করেছিলেন, যার ভিত্তিতে প্রতি পাঁচ বছরে সাংসদদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে বিবেচনা করে এই বৃদ্ধি হবে বলে জানানো হয়। কোভিড মহামারী চলাকালীন ২০২০ সালে সাংসদ এবং মন্ত্রীদের বেতন এক বছরের জন্য ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। 

সংসদের উচ্চ এবং নিম্ন কক্ষ — রাজ্যসভা, লোকসভার প্রতিনিধিরা এখন মাসে ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা বেতনের পাশাপাশি নির্বাচনী কেন্দ্রের ভাতা হিসাবে ৮৭ হাজার টাকা পাবেন। আগে যা ছিল ৭০ হাজার। অফিস খরচ বাবদ আগে যে ৬০ হাজার টাকা পেতেন, এখন সেই খাতে ৭৫ হাজার টাকা করে পাবেন প্রত্যেকে। সাধারণভাবে, এই ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে কম্পিউটার জানা একজন ব্যক্তির নিয়োগ বাবদ ৫০ হাজার টাকা এবং বাকি অফিসের কাজে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য ২৫ হাজার টাকা ধার্য করা হয়ে থাকে। এছাড়াও আসবাবপত্র কেনার জন্য সাংসদরা তাঁদের মেয়াদের মধ্যে একবার ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পান। এর আগে এই খাতে মোট ১ লক্ষ টাকা পেতেন। পাশাপাশি বিত্তলভাই প্যাটেল হাউজের একটি হস্টেল ছাড়াও মধ্য দিল্লিতে দু’কামরার ফ্ল্যাট এবং বাংলো আলাদা আলাদাভাবে বরাদ্দ থাকে প্রত্যেক সাংসদের জন্য। তাঁরা বিনামূল্যে ৫০ হাজার ইউনিট বিদ্যুত পরিষেবা পেয়ে থাকেন। সাংসদ এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা নির্দিষ্ট নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে দিল্লি পর্যন্ত ৩৪টি টিকিটের একবারের বিমান ভাড়া পেয়ে থাকেন। সড়ক এবং রেলপথেও বিস্তর সুযোগ সুবিধা পান তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য প্রকল্প সিজিএইচএসের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা হয় তাঁর এবং পরিবারের অন্যদের। প্রাক্তন সাংসদরাও এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। এছাড়াও সরকারি গাড়ি সহ বিভিন্ন পরিষেবা বরাদ্দ থাকে তাঁদের জন্য।

Comments :0

Login to leave a comment