জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)‘র আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে পালটা এফআইআর। হামলার জন্য দায়ের আগের এফআইআর’র ভিত্তিতে কোনও গ্রেপ্তারি নেই। ভূপতিনগর তল্লাশি নিয়ে ফের আরোপ পালটা আরোপে মগ্ন হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। ঘটনাপ্রবাহ মনে করিয়ে দিচ্ছে সন্দেশখালিকে।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থেকে তৃণমূলের দুই স্থানীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। সে সময়ে একাংশ ইট পাটকেল ছুঁড়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার গাড়িতে। তৃণমূলের পতাকাও দেখা গিয়েছে ভিড়ে। ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখা শাহজাহানের বাড়িতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয় ইডি। রবিবার এনআইএ-বিজেপি যোগের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি।
তৃণমূলের দাবি, তাদেরই দল ছেড়ে বিজেপি’তে যোগ দেওয়া আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এনআইএ’র কাছে তৃণমূল নেতাদের তালিকা দিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে বলেছেন। তিওয়ারি আবার বলেছেন, প্রমাণ দিতে না পারলে মানহানি মামলা করবেন।
সেই সুযোগে ‘দুষ্টের দমনে’ গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্নীতি এবং হিংসাকে খোলা লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে তৃণমূল। সে কারণেই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তদন্তে নামলে আক্রমণ হয়।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘সন্দেশখালিতে কী হয়েছে সবাই দেখেছেন। দোষীরা এবার বাকি জীবন জেলে কাটাবে।’’
ভূপতিনগর কাণ্ডে তৃণমূলের দুই নেতা ধৃত বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানাকে এনআইএ গ্রেপ্তার করে। ২০২২ সালে তৃণমূল নেতা রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। মান্নার সঙ্গে আহত হন তৃণমূলেরই বিশ্বজিৎ গায়েন ও বুদ্ধদেব মান্না। পরে মারা যান তাঁরা। ২০২২’র ৩ ডিসেম্বর রাজ্য পুলিশ এফআইআর দায়ের করলেও বিস্ফোরক আইনের ধারা ছিল না। ২০২৩’র ২১ মার্চ বিস্ফোরক আইন যুক্ত হয় হাইকোর্টের নির্দেশ। ২০২৩’র ৪ জুন তদন্ত শুরু করে এনআইএ। গ্রেপ্তারি হলো প্রায় ৯ মাস পর।
এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ এবং মহিলাদের শ্লীলতাহানির ধারা যুক্ত হয়েছে পুলিশের করা এফআইআর-এ।
বামপন্থীরা বিভিন্ন সময়েই বলেছেন, রাজ্যের পুলিশ তদন্ত না করে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জনন্য জায়গা করে দেয়। আর তদন্তের মাঝে বিজেপি নেতানেত্রীরা ভাষণ দিলেও তদন্তের কিনারা হয় না। একে অন্যের বিরুদ্ধে ভাষণ দেয় কেবল। রাজনীতিতে ‘তৃণমূল বনাম বিজেপি’ দ্বৈরথ তৈরির চেষ্টা চালায়।
Comments :0