রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বের ভোট গ্রহণ চলছে তুরস্কে। রাষ্ট্রপতি পদে আসীন রেসেপ তায়িপ এরদোগানকে তাঁর কুড়ি বছরের শাসনে এই প্রথম চূড়ান্ত পর্ব বা ‘রান অফ’-র মুখে পড়তে হয়েছে। প্রথম পর্বে পঞ্চাশ শতাংশের সীমা পেরতে না পারলেও এরদোগান এগিয়ে ছিলেন প্রায় ২৫ লক্ষ ভোটে।
এরদোগানের সঙ্গে চূড়ান্ত পর্বে লড়াই করছেন কেমাল কিরিচদেরলু। এরদোগান তুরস্কের ‘মহান অতীত’-কে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখিয়ে লড়ছেন ভোট। তাঁকে ঘিরে প্রধান অভিযোগ কর্তৃত্ববাদী শাসন চালানোর। কুর্দদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা, নাগরিক অধিকারের পক্ষে আন্দোলনের কর্মীদের বন্দি করা। নিপীড়নে অভ্যস্ত শাসন চালানোর।
কিরিচদেরলু প্রথম পর্বে পেয়েছিলেন ৪৫.৫ শতাংশের কাছাকাছি ভোট। এরদোগান পঞ্চাশের কিছু আগে ৪৯ শতাংশ পার করে আটকে গিয়েছিলেন। তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী প্রথম পর্বে কোনও প্রার্থী পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ‘রান অফ’-এ যেতে হবে।
প্রথম পর্বে প্রায় ৮৮ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের দক্ষিণ অংশ বিধ্বস্ত হয়েছে ভয়াবহ ভূমিকম্পে। বহু নাগরিককেই আশ্রয় নিতে হয়েছে অন্যত্র। তাঁদের জন্য পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানাচ্ছে প্রশাসন। প্রথম পর্বে ভোট দেননি প্রায় ৮০ লক্ষ নাগরিক। তাঁদের দিকে নজর দিয়েছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে পর্যবেক্ষকরা এগিয়ে রেখেছেন এরদোগানকেই।
কিরিচদেরলুর প্রচারে গুরুত্ব পেয়েছে জীবনমানের সঙ্কট এবং মূল্যবৃদ্ধি। বিরোধী বিভিন্ন অংশ তাঁকে সমর্থনও জানিয়েছে। তবে এরদোগান এবং তাঁর সহযোগীরা কিরিচদেরলুকে পশ্চিমের দেশগুলির সহযোগী বলেই প্রচার চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ বলছেন, কোনওভাবে কিরিচদেরলু জয়ী হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সহজ হবে তুরস্কের সম্পর্ক।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা রাখতে এরদোগান ধারাবাহিকভাবে পশ্চিমের সমালোচনা করছেন। আবার তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধজোট ‘ন্যাটো’-র সঙ্গে তুরস্কের যোগাযোগ জোরালো করেছেন। ন্যাটোর নির্ভরযোগ্য সদস্য তুরস্ক।
‘রান অফ’-র আগে কিরিচদেরলু কারচুপির আশঙ্কা জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ভোটদাতাদের উদ্দেশ্যে তাঁর মোবাইল বার্তা আটকে দিয়েছে প্রশাসন। বিরোধী বিভিন্ন দল ভোট পর্যবেক্ষণে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়েছে। ভোট গোনা শুরু হলে বোঝা যাবে কাজের কাজ কতটা হয়েছে।
Comments :0