JALPAIGURI TEA

চা গাছে পাতা নেই তাপের দাপটে, ক্ষোভের মুখে বৈঠক টি-বোর্ডের

রাজ্য

JALPAIGURI TEA উত্তাপে শুকিয়ে হলদেটে চায়ের পাতা। ছবি: প্রবীর দাশগুপ্ত

দীপশুভ্র সান্যাল

তীব্র দাবদাহে গোটা রাজ্যের সঙ্গে পুড়ছে উত্তরের জেলাগুলিও। গত ১৫ দিনে তীব্র দাবদাহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের চা চাষ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি ‘টি বোর্ড’ কার্যালয়ে চা পাতার দাম ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সভা ডাকা হয়।  কেন্দ্রীয়  শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক চালায় টি-বোর্ড। চোখ বুঁজে থাকার অভিযোগ বারবার উঠেছে এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে।

ছোট উৎপাদক বিজয় গোপাল চক্রবর্তী, রজত কুমার রাইকার্যী, জয়ন্ত বণিক, নিতাই মজুমদার থেকে প্রান্তিক চা চাষী সমিতির পক্ষে রঞ্জিত গাঙ্গুলি, ইউনাইটেড ফোরামের পক্ষে পার্থ প্রতিম পাল টি-বোর্ডে জানিয়েছেন পাতা নেই গাছে। এমন হয় না। চা পাতার দামও নেই। চা পাতার ন্যূনতম ন্যায্য দাম দেওয়ার আবেদন জানান। ফসল বিমা, জলসেচ ভর্তুকি চা পাতার দাম নজরদারি কমিটি গঠন, দেশীয় বাজারে চায়ের বিক্রি বৃদ্ধির লক্ষে তহবিল গড়ার দাবিও তোলেন। যে সমস্ত বহুজাতিক চা প্যাকেট জাত সংস্থা গুলি চায়ের বাজার কুক্ষিগত করে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

টি বোর্ডের সহকারী নির্দেশক সবরী চৌধুরী গোহাই বলেন, টি বোর্ড বর্তমান পরিস্থিতি জানে। বাস্তব সম্মত প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন দেশের উৎপাদনের ৫২ শতাংশের অবদান ক্ষুদ্র চা চাষীদের। তাঁদের স্বার্থ দেখার আশ্বাস দেন। 

টি বোর্ডের নীরব ভূমিকারও সমালোচনা করেন ক্ষুদ্র চা উৎপাদকরা।

২০২২-২৩ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গ উৎপাদিত চা প্রায় ৪২ কোটি কেজি। যার বেশিরভাগই সিটিসি চা। ৬০ শতাংশ উৎপাদন ক্ষুদ্র চা চাষীদের, যার পরিমান ২৫ কোটি। টি বোর্ডের হিসেব, জলপাইগুড়ি জেলাতে মোট ২১ হাজার চা চাষী, কোচবিহারে ৩ হাজার, উত্তর দিনাজপুরে ১১ হাজার, দার্জিলিংয়ে ৩ হাজার ৭০০। ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়।  মোট ২২৬-টি বট লিফ ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। 

কেন হচ্ছে সমস্যা? রোদের প্রখর তাপ, বৃষ্টির স্বল্পতা দায়ী। এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ৪০ লক্ষ কেজি কম হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন কমলেও পাতার দাম বাড়ছে না। চা আন্দোলনের নেতা বাদল গুহ জানালেন, ‘‘এ ধরনের তীব্র গরমের পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে আগে কখনো ঘটেনি। শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। চা বাগানে কাজ করতে গিয়ে। তবুও পেটের দায়ে তাদের কাজ করতে হচ্ছে। অনাবৃষ্টির কারণে বাগানে কৃত্রিমভাবে জল দেওয়ার কাজ চলছে। দু-একদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে চা বাগানের বিরাট ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment