সমানে বাড়ছে বিশ্বের উত্তাপ। চলছে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বহু মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছেন। তবু রাষ্ট্র প্রধানদের বড় অংশের হুঁশ নেই। প্রতিবাদে শুক্রবার বিশ্বের একশোর বেশি শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা। চলছে ‘জলবায়ু ধর্মঘট’।
গ্রেটা থুনবার্গের ‘ফ্রাইডে ফর ফিউচার’ আন্দোলন সাড়া ফেলেছিল বিশ্বে। ‘ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ বা জলবায়ু ধর্মঘটের জন্য শুক্রবারই বেছে নিয়েছেন প্রতিবাদীরা। শামিল বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরাও।
প্রতিবাদে মানচিত্রে শামিল কলকাতা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে রাজ্যের একাধিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা শামিল মানব বন্ধনে। ভবিষ্যতের জন্য, নতুন প্রজন্মের জন্য বিশ্বকে বাঁচাও- এই স্লোগানে চলছে মানববন্ধন।
সুইডেনে পরিবেশ কর্মীরা সংসদের সামনে জড়ো হয়েছেন। জড়ো হয়েছে রাজপ্রাসাদের সামনে। ‘জলবায়ু ন্যায় চাই’, স্লোগান উঠেছে রাজপথে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় দেশের পরিবেশ মন্ত্রকের সামনে হয়েছে বিক্ষোভ। দাবি উঠেছে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করা দিকে এগতে হবে।
সব অংশ নয়, তবে বিভিন্ন অংশই সরব কর্পোরেট লুন্ঠনে। তাঁরা বলেছেন, মুনাফার লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে নীতি। সব সতর্কতা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশের সরকার এড়িয়ে যাচ্ছে দায়। মুনাফার জন্য লুন্ঠনকে বিন্দুমাত্র বাধা না দিয়ে চলার উদ্দেশ্যে। এই যোগাযোগ এড়ানো যাবে না। পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরে মুনাফাকেই একমাত্র লক্ষ্য বানানো যাবে না। বিশ্বের আটশো কোটি মানুষের জীবনের প্রশ্ন, রোজগারের প্রশ্নও জড়িয়ে রয়েছে উষ্ণায়নের সঙ্গে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘও এক সপ্তাহ আগে ফের মনে করিয়েছে জলবায়ু ন্যায়ের প্রতিশ্রুতি। লষ্য মুখ্যত শিল্পোন্নত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা। শিল্পায়ন শুরু হওয়ার আগের সময়ের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখতে হবে বিশ্বের তাপমাত্রাকে। এর মধ্যেই ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। হিমবাহ গলছে, অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে ধস নেমে প্রাণহানি অব্যাহত। বাড়ছে সমুদ্রে জলস্তর। সামুদ্রিক ঝড়ে জনবসতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। লিবিয়াতে এক ঝড়ে ১১ হাজার মানুষের প্রাণহানির খবর এদিনই দিয়েছে সরকার। বসতি হারাচ্ছেন মানুষ। হারাচ্ছেন রোজগার।
রাষ্ট্রসঙ্ঘ মনে করিয়ে যে চলতি বছরের কয়েক মাসে ইতিহাসে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা দেখা গিয়েছে। শুক্রবারই জানা গিয়েছে এবারের আগস্টের মতো গড় উষ্ণতা পৃথিবীকে সইতে হয়নি অতীতের কোনও আগস্টে। তেমনই গিয়েছে জুলাই।
পরিবেশ কর্মীরা জানিয়েছেন রবিবার নিউ ইয়র্কে হবে বড় প্রতিবাদ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরে। চলবে আন্দোলন।
Comments :0