নির্মান শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ তৃণমূল সরকারের আমলে হয়নি। এই সরকার আসার আগে থেকেই আছে। এখন কল্যাণ পর্ষদের সঞ্চিত অর্থের অপব্যবহার করার জন্যই এই পর্ষদকে তছনছ করা হয়েছ। শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য সঞ্চিত অর্থ নয়ছয় করা হচ্ছে। শ্রমদপ্তরের তথ্য সম্বলিত সরকারি বই ' লেবার ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল ' প্রকাশ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কোনো পরিসংখ্যান সামনে আনা হয়না। বৃহস্পতিবার বারাকপুর মহকুমা শ্রম দপ্তরের সামনে নির্মাণ শ্রমিকদের জমায়েতে সিআইটিইউ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গার্গী চ্যাটার্জি একথা বলেন। শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও জমায়েত থেকে ৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের হাতে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি গুলি নিয়ে কথা বলেন।
বিক্ষোভ সভাতে সভাপতি ছিলেন শম্ভু দত্ত চৌধুরী। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন, দেবাশিস রক্ষিত, শিবশঙ্কর ঘোষ, সুমন চক্রবর্তী। স্মারকলিপি দেওয়ার পর প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সুকুমার মন্ডল বিক্ষোভ সভাতে জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিপত্র পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এএলসি'র তরফে।
গার্গী চ্যাটার্জি বলেন , শ্রম দপ্তর এখন ঘুঘুর বাসায় পরিনত হয়েছে। তৃণমূল সরকারের মতোই এখানে মালিক ঠিকাদার দের দালালি করা হয়। শ্রম দপ্তর এখন অসাধু দালালদের আড্ডা। নির্মাণ শ্রমিকরা শ্রম দপ্তরে এলে কি ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেকথা উল্লেখ করে গার্গী চ্যাটার্জি বলেন , অন লাইন ব্যবস্থা কজন শ্রমিক ব্যবহার করতে পারেন?
শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কাজ আদায় করতে নিয়মিত শ্রম দপ্তরে আসতে হবে। শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে প্রাপ্য অর্থর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যায্য প্রাপ্য অর্থ পেলে নির্মাণ শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের প্রয়োজন হতোনা। পরিবারের ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষা খাতে অর্থ পেতো। এখন প্রাপ্য অর্থ পাওয়া বন্ধ, ১০০ দিনের কাজের সাথে যুক্তদের কাজ বন্ধ, কাজ করিয়ে মজুরি দেওয়া হয়না।
ন্যায্য প্রাপ্য আদায়ের জন্য ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন জারি রাখার আহ্বান জানিয়ে গার্গী চ্যাটার্জি বলেন, জাতীয় উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ কাজ নির্মাণ শ্রমিকদের মেহনতের বিনিময়ে হয়। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের হাতে শ্রমিকদের অধিকার মর্যাদা আজ আক্রান্ত।
নির্মাণ শ্রমিকদের শারদীয়া অনুদান দেওয়ার দাবি জানিয়ে দেবাশিস রক্ষিত বলেন, দূর্গা পূজায় সরকারি অর্থ দেওয়াতে আপত্তি নেই কিন্তু নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদে সঞ্চিত বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো হিসাব দেওয়া হচ্ছেনা কেন ?
৯ দফা দাবিতে বলা হয়েছে, নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের অর্থ অপব্যায় বন্ধ করতে হবে। শ্রমিক বিরোধী শ্রম কোড বাতিল করতে হবে। 'বিওসিডাবলিউ' আইন এবং আন্তঃরাজ্য অভিবাসী শ্রমিক আইন ১৯৭৯ কে শক্তিশালী করতে হবে। নির্মাণ শ্রমিকদের মাসে নূন্যতম ২৬ হাজার টাকা মজুরি এবং নূন্যতম ১০ হাজার টাকা পেনশনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্মাণ সামগ্রী ও সরঞ্জামের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং জিএসটি'র হার কমাতে হবে। সেস্ ফাঁকি বন্ধ করতে হবে, যথাযথ ভাবে সেস্ সংগ্রহ এবং ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নির্মাণ কল্যাণ বোর্ড গুলিতে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলির প্রতিনিধি নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
Comments :0