পঞ্চায়েতের তৃণমূলের লুঠ মানুষের সামনে তুলে ধরতে ‘পাহারায় পাবলিক’ চালু করেছিল সিপিআই(এম)। এবার পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ যাতে না করতে পারে তৃণমূল তার পাহারা দেবে সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেলিম বলেন, ‘‘বুথ পাহারায় জনগনের অংশগ্রহনমূলক ব্যবস্থা এই পাহারায় পাবলিক। গড়ে তুলতে হবে জনগণের পঞ্চায়েত। সন্ত্রাস, লুট, বিভাজনের রাজনীতিকে পরাস্ত করে আদায় করতে হবে হকের দাবী। পুলিশ প্রশাসনের একাংশের মদতে তৃনমূল-বিজেপির ভোট লুটের অপচেষ্টা ও নির্বাচনী বিধিভঙ্গের যে কোন তথ্য সাধারণ মানুষ আমাদের এই ফর্মের মাধ্যমে। মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার লড়াইয়ে বুথ আগলাবেন মানুষই। এবার পাহারায় পাবলিক।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতো তাহলে আজ আমাদের এই কাজ করতে হতো না।’’
উল্লেখ্য রাজ্য সিপিআই(এম) এর এই অনলাইন অভিযোগ পত্র https://www.leftsquad.in/paharaypublic/ গিয়ে এই ফর্ম পেতে পারেন বা https://www.facebook.com/PaharayPublic গিয়ে এই ফর্ম পেতে পারেন অথবা আপনার মোবাইল ব্রাউজারে https://surl.li/isiwe টাইপ করে এই ফর্ম পেতে পারেন।
সেলিম জানিয়েছেন, যারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচন চান, মানুষ যাতে অবাধে ভোট দিতে পারুক তারা যদি দেখেন কোথাও ভোট লুঠের চেষ্টা হচ্ছে, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হচ্ছে, হামলা হচ্ছে তাহলে এই অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎক্ষনাত অভিযোগ জানাতে পারবেন। সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদকের কথায় প্রতি মুহুর্তে এই অভিযোগ গুলির ওপর নজরদারি চলবে। কোথায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাও ঠিক করা হবে দলের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ জমা পড়া পর তার সত্যতা বিচার করা হবে। তারপর অভিযোগের প্রকার ভেদ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ সেলিম জানিয়েছেন, অভিযোগের প্রকার ভেদের ভিত্তিতে আইনি, প্রশাসনিক, চিকিৎসা সংক্রান্ত, পুলিশী ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিপিআই(এম) নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অভিযোগকারির তথ্য পুরোপুরি গোপন রাখা হবে।
নির্বাচন পর্বে হিংসা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন দুই একটা জায়গায় ছাড়া কোথাও কোন অশান্তি হয়নি। সেই বিষয় সেলিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কয়েকজন বশংবদ অফিসার রয়েছে বলেই সাধরাণ মানুষকে পাহারায় নামতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যারা বোমা গুলি মজুত করছে তারাই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে টালবাহানা করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে তাকে থানায় বসিয়ে রাখলে হবে না। রুট মার্চ করাতে হবে।’’ শাসক দলের গুন্ডাবাহিনীর প্রতি হুঁশিয়ারির সুরে সেলিম বলেন, ‘‘মানুষ এবার ভোট লুঠ আটকাতে মরিয়া।’’
উল্লেখ্য হাই কোর্ট বার বার বলা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত স্পর্ষকাতর বুথ চিহ্নিত করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মহম্মদ সেলিম এদিন বলেন, ‘‘রাজ্যের সব স্পর্ষকাতর বুথ চিহ্নিত করা হোক। গত নির্বাচন গুলিতে যেখানে যেখানে ঝামেলা হয়েছে সেখানে বাহিনী নিয়োগ করা হোক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে স্পর্ষকাতর বুথের তালিকা জমা দিয়েছি।’’
গতবছর পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের দুর্নীতি সাধারণ মানুষের তুলে ধরতে নজরে পঞ্চায়েত এবং পাহারায় পাবলিক চালু করে সিপিআই(এম)। সেখানে তৃণমূল নেতার আবাস যোজনায় দুর্নীতি থেকে একশো দিনের টাকা চুরির কথা উঠে আসে। সাধারণ মানুষ নিজেরাই হেল্প লাইন নম্বরে অভিযোগ জানায়।
ছবি বিধান ভট্টাচার্য
Comments :0