Dholahat

আজও ঢোলাহাট থানায় বিক্ষোভ, হাইকোর্টে মামলা

রাজ্য

বুধবার ঢোলাহাট থানায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ।

অনিল কুন্ডু 

পুলিশ হেপাজতে মারধরে আবু সিদ্দিক হালদার (২২) নামে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবারও প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হল ঢোলা থানা এলাকা। লক আপে মারধর করায় পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন মৃত যুবকের পরিবার পরিজনসহ গ্রামবাসীরা। দলমত নির্বিশেষে এদিন বহু মানুষ ঢোলাহাট থানার সামনে প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে বিক্ষোভ কর্মসুচিতে শামিল হয়। বিক্ষোভ সভা চলাকালীন ওই যুবকের পরিবারের তরফে থানায় দাবি সনদ পেশ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ মৃত যুবকের স্ত্রীকে চাকরি ও দোষী পুলিশ আধিকারিকদের কঠোর শাস্তির দাবিতে থানায় এদিন দাবি সনদ পেশ করা হয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তর শেষে কলকাতা থেকে মঙ্গলবার রাতেই তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল।
ঢোলাহাট থানার পুলিশি বর্বরতার উল্লেখ করে মৃত ওই যুবকের শোকার্ত পরিবারের তরফে এদিন অভিযোগ করে বলা হয়েছে, আবু সিদ্দিক হালদারের মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমনকি তাঁর পায়ু পথে লোহা জাতীয় কিছু ঢোকানো হয়েছিল যার ফলে সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁদের নির্দিষ্ট অভিযোগ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এমন মারধর করা হয়েছে যে তাঁর দুটি কিডনিই গুরুতর জখম হয়েছিল। পুলিশ হেপাজতে মারধরের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 
এদিকে ঢোলাহাট থানার লকআপে পুলিশি বর্বরোচিত অত্যাচার মারধরে ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের সময় ভিডিও গ্রাফি করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর পরিবার। এদিন এই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে পরিবারের তরফে মামলা করা হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিনও বহু মানুষ নিরাপরাধ যুবককে লকআপে পিটিয়ে মারার ঘটনার প্রতিবাদে ঢোলাহাট থানারসামনে বিক্ষোভ দেখায়। ঘাটবকুলতলা গ্রামের যুবক, পুরুষ, মহিলা দলমত নির্বিশেষে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসুচিতে শামিল হয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীরা এদিন জানান, গ্রামের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে দলমত নির্বিশেষে দোষী পুলিশ আধিকারিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢোলাহাট থানা অভিযান কর্মসুচিতে শামিল হবেন। ইনসাফের দাবিতে শেষতক পর্যন্ত তাঁরা এই লড়াই করবেন। প্রয়োজনে তীব্র লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীরা। 
এদিন বাড়ির কাছেই মৃত ওই যুবককে কবরস্থ করা হয়। তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সিপিআই(এম) নেতা কান্তি গাঙ্গুলি, মিত্যেন্দু ভূঁইঞা, রইচউদ্দিন মোল্লা, সাম্য গাঙ্গুলিসহ স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকীও এদিন মৃত যুবকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন। পুলিশি বর্বরতায় নিরাপরাধ যুবকের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন গোটা ঘাটবকুলতলা গ্রামের বাসিন্দারা। শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতো শপথ নেন তাঁরা।

Comments :0

Login to leave a comment