Cooch Behar Rasikbil

কোচবিহার থেকে ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবককে পাঠানো হলো মুর্শিদাবাদে

জেলা

ঘড়িয়াল শাবককে ঢোকানো হচ্ছে বিশেষ পাইপে। ছবি- অমিত কুমার দেব।

প্রায় দেড় বছর যাবত পরম স্নেহে তাদের লালন করেছেন তারা, আর এবার তাদেরকে খোলা প্রকৃতির কোলে ছেড়ে দিতে হবে। আর এই উদ্দেশ্যেই তুফানগঞ্জ ২নং ব্লকের রসিকবিল মিনি জু থেকে ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবককে শনিবার সকালে বিদায় জানালেন বন কর্মীরা। এই ঘড়িয়াল শাবকদের বিদায় বেলায় মন ভারাক্রান্ত তাদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বনকর্মীদের।
এই ঘড়িয়াল শাবকদের পৃথক পৃথক পাইপে ভরে বিশেষ ভাবে একটি লরিতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের গঙ্গা নদীর উপনদী জলঙ্গীর টিকটিক পাড়া এলাকায় প্রকৃতি পরিবেশে। রীতিমতো গ্রীন করিডর করে নিয়ে যাওয়া হবে তাদের বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। ইতিপূর্বেই বনদপ্তরের তরফে সব জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে এদিনই ছেড়ে দেওয়া হবে তাদের।
জানা যায় এই রসিকবিলে দীর্ঘ  ২১বছর যাবৎ রয়েছে  ১১টি ঘড়িয়াল। এর মধ্যে ৪টি স্ত্রী ও ৭টি পুরুষ। বিগত বছর ধরে তাদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোঁটানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বিফলে যায় বারবার। কারণ উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাত বেশি। তাই বিগত দিনে ডিম পচে যাচ্ছিল। ঘড়িয়ালের প্রকৃত আবাসস্থলে তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই এরপর কৃত্রিম উপায়ে বালির বেড বানিয়ে ডিম রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সিসিটিভি নজরদারির মাধ্যমে ঘড়িয়ালের ৬৬টি ডিম সংগ্রহ করে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র বা নার্সারি তৈরি করে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখা হয় ডিমগুলি। এখানে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও নিয়মিত সেগুলি পরিমাপ করার পর প্রথমবার ডিম ফুঁটে ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবক জন্ম নেয় রসিকবিলে। 
পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র রসিকবিল মিনি জু তেই কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে একসাথে ৩৭টি ঘড়িয়াল ছানা জন্ম নেয়। রীতিমতো আলাদাভাবে রেখে দেখভাল করা হত এই ঘড়িয়াল শাবকদের। প্রায় দেড় ফুট লম্বা ঘড়িয়াল শাবকদের বর্তমান বয়স প্রায় দেড় বছর। শুধু তাই নয় এই রসিকবিলে পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল ওই ঘড়িয়াল শাবকেরা।
কোচবিহার বন বিভাগের এডিএফও বিজন কুমার নাথ জানান, জু অথরিটির নির্দেশে ৩৭টি ঘড়িয়াল শাবকদের প্রকৃতি পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে যাতে এদের চিহ্নিতকরণ করা যায়, এই উদ্দেশ্যে শাবকদের শরীরে মাইক্রোচিপ লাগানো হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে প্রত্যেকের ওজন পরিমাপের পর পৃথক ভাবে গোল পাইপে ভরা হয়েছে। ঘড়িয়াল শাবকদের মুর্শিদাবাদের গঙ্গা নদীর উপনদী জলঙ্গীর টিকটিক পাড়া এলাকায় প্রকৃতি পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Comments :0

Login to leave a comment