বিশ্বনাথ সিংহ
জমি বিবাদে উত্তাল আবার রায়গঞ্জ। দীর্ঘদিন ধরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে জমি দখল নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলছিলো। সেই জমি সংক্রান্ত বিবাদে রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা সোনা টোপনো সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করলো রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য গ্রেপ্তারের পরই রায়গঞ্জ আদালত চত্ত্বরেই বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা। যা নিয়েই ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে জেলাজুড়ে।
গ্রেফতার হওয়া পঞ্চায়েত সদস্যা সোনা টোপনোর দাবী, "সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আদিবাসীদের জমি বেদখল করছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও একাধিকবার আদিবাসীদের জমি বেদখল করা যাবে না এবং কেনাবেচা করাও যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন।" কিন্তু তারপরেও বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী তার ফ্যাক্টরির পাশে থাকা আদিবাসীদের জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ। কিন্তু তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রতিবাদ করাতে রায়গঞ্জের বিধায়ক পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে পরিবার সহ গ্রেফতার করেছে।
যদিও এই বিষয়ে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সভাপতি উত্তম পাল অভিযোগ করে বলেন, "গোটা রাজ্যের সাথে রায়গঞ্জেও নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি করছে। পাট্টা পাওয়া জমি, চা বাগানের বেদখলের মাষ্টার মাইন্ড জন প্রতিনিধিরা। একটা কমলাবাড়ি ঘটনা শুধু নয় রায়গঞ্জ শহরে কাউন্সিলররা একের পর জলাশয় ভর্তি করে বিল্ডিং করছে। প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটে আছে। কি আর বলা যাবে? তৃণমূল আর দুর্নীতি সমার্থক।"
বিধায়কের মন্তব্য না পাওয়া গেলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি অরিন্দম সরকারের বলেন, "সোনা টোপনোর বিরুদ্ধে জমি দখলের একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়েই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। আর তৃণমূল করলেই যে আদিবাসী বা যে কারোর জমি দখল করা যায় না। পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। পাশাপাশি এই বিষয়ে শাসক দল ও তৃনমুল বিধায়ককে তীব্র কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের অভিযোগ তৃণমূল মানেই তো কয়লা গরু মাটি বালি জমি চোর। রায়গঞ্জের বিধায়ক এই জমি কারবার বা অনৈতিক কারবারের জন্যেই তৃনমুল কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছে। এটা তো সবাই জানেন।"
উত্তেজনা দেখা দিতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা সোনা টোপনো সহ আটজনকে গ্রেফতার করে রায়গঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃসপ্রণোদিত মামলা রুজু করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম সোনা টোপনো, জগমনি পাহান, লিলি টপনো ,কালি ওরাও, কলম্বাস খোয়া, গোপাল সরকার, গৌতম পাহান, সুনীল পাহানকে ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৯ (৪)/১১৫ (২)/৩০৩(২)/১০৯/২৮৬/৩৫১(২)/৩(৫) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
Comments :0