ISRAEL PALESTINE CONFLICT

অব্যাহত সংঘর্ষ, গাজায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে ইজরায়েলেরও

আন্তর্জাতিক

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news

গাজা সংঘর্ষে একদিনে ২৪জন ইজরায়েলী সেনা জওয়ানকে হত্যা করল হামাস। ইজরায়েলী সেনা বাহিনীর মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরা জানাচ্ছে, গাজা শহরের কেন্দ্রস্থলে ইজরায়েলী বাহিনীকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করেছে হামাস। 

আল জাজিরা জানাচ্ছে, গাজা শহরের কেন্দ্রস্থলে ২টি বহুতলকে ধ্বংস করার জন্য বিস্ফোরক মজুদ করছিলেন ইজরায়েলী সেনা জওয়ানরা। মাঝারি মাপের বাহিনীটিকে ঘিরে রেখেছিল একটি মেরকাভা সামরিক ট্যাঙ্ক। হামাস অতর্কিতে হামলা চালায় ট্যাঙ্কটি লক্ষ্য করে। ছোঁড়া হয় ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী রকেট। ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের তীব্রতায় ২টি বাড়িতে মজুদ বিস্ফোরকে আগুণ লেগে যায়, এবং তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ হয়। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রাণ হারান ২৪জন ইজরায়েলী জওয়ান। 

ইজরায়েলী সেনা সূত্রে খবর, গাজা অভিযানে এখনও অবধি ২১৭জন সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। অক্টোবরের গোড়া থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৫২ জন। 

হামাসের হাতে বন্দী শতাধিক যুদ্ধবন্দীকে এখনও ছাড়িয়ে আনতে পারেনি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র সরকার। তার উপর মঙ্গলবারের এই আঘাতে বেজায় চাপে পড়েছে নেতানিয়াহু সরকার। যদিও সমস্ত চাপ অস্বীকার করে নেতানিয়াহু প্রশাসন জানিয়েছে, ‘‘যুদ্ধ জয় না হওয়া অবধি আমরা লড়াই চালাব।’’

গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু’র যুদ্ধকালীন ক্যাবিনেটের সদস্য তথা প্রাক্তন মিলিটারি চিফ অফ স্টাফ গাদি আইসেনকোট জানিয়েছিলেন, ‘‘গাজায় লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয়েছে ইজরায়েলী সেনা। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে যুদ্ধবন্দীদের মুক্ত করা অসম্ভব।’’

প্রসঙ্গত, গাজা অভিযানে নিজের সন্তানকে হারিয়েছেন গাদি আইসেনকোট। সেই আইসেনকোটের মন্তব্যেই স্পষ্ট, আলোচনার টেবিল ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। যদিও সেই বক্তব্য কানে তুলতে রাজি নন নেতানিয়াহু। 

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নেতানিয়াহু গাজা অভিযান শুরুর সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যে সমস্ত যুদ্ধবন্দীকে ফিরিয়ে আনা হবে। হামাসকে সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবেও দেখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ততই বেগ পেতে হয়েছে ইজরায়েলী সেনাকে। সামরিক অভিযান বন্ধ করলেই পড়ে যেতে পারে নেতানিয়াহু সরকার। তাই ক্ষয়ক্ষতি বাড়লেও সামরিক অভিযান বজায় রাখা ছাড়া গতি নেই নেতানিয়াহু প্রশাসনের। 

অপরদিকে গাজা শহর ছাড়িয়ে খান ইউনিস শহরে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধ। মঙ্গলবার খান ইউনিসের নাসের এবং এল আমাল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলী সেনা। ইজরায়েলের দাবি, ওই দুই হাসপাতালে লুকিয়ে রয়েছেন হামাসের একাধিক শীর্ষ নেতা। যুদ্ধবন্দীদেরও রাখা হয়েছে হাসপাতালে। 

গাজার আল শিফা হাসপাতালকে ঘিরেও একই দাবি জানিয়েছিল ইজরায়েল। তাণ্ডব চালিয়ে হাসপাতালটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলেও নিজেদের দাবি প্রমাণ করতে পারেনি ইজরায়েল। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, খান ইউনিসেও একই অবস্থা হতে পারে। 

আল জাজিরা জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘন্টায় খান ইউনিসে ৬৫জনকে হত্যা করেছে ইজরায়েল। সব মিলিয়ে গাজায় ৭ অক্টোবর থেকে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫, ৪৯০জন। আহতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক নিহতদের নামের তালিকা প্রকাশ করে দেখিয়েছে, নিহতদের সিংহভাগ মহিলা এবং শিশু। 

 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment