ISRAEL PALESTINE CONFLICT

গাজায় বিরাম নেই ইজরায়েলের হামলার

আন্তর্জাতিক

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news

 গাজার ২৩ লক্ষ জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, বা ১৮ লক্ষের বেশি মানুষ একাধিকবার বাধ্য হয়েছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই বদলাতে। তাঁদের শেষ আশ্রয় রাফা শহরেও শুরু হয়েছে ইজরায়েলী হামলা।  রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই ছবি। একইসঙ্গে ইজরায়েলের দাবি, গাজা শহর নয়, খান ইউনুস থেকে চালিত হয় হামাস। 

৭ অক্টোবর থেকে চলা ইজরায়েলী সেনা অভিযানে গাজা’র ১৬,২০০ জন বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন। তাই প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। 

আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডারস্‌ সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে বৃহস্পতিবার লিখেছে, ‘‘গত ২৪ ঘন্টায় আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নতুন করে ১১৫টি মৃতদেহ এসেছে। হাসপাতালে আর মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই। মর্গ উপচে পড়ছে মৃতদেহের ভিড়ে।’’

আল-জাজিরা, রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট সহ অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, উত্তর গাজা এবং গাজা শহর ছাড়িয়ে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের দক্ষিণেও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ইজরয়েলী সেনা জানিয়েছে, তারা খান ইউনুস শহরে হামলা চালিয়েছে। ইজরায়েলী বাহিনীর দাবি, তারা হামাসের ব্যবহৃত একটি সুড়ঙ্গ গুড়িয়ে দিয়েছে। ২ হামাস সদস্যকেও মারা হয়েছে বলে ইজরায়েলের দাবি। 

ইজরায়েল দাবি করে, খান ইউনুসের একটি ত্রাণ শিবিরে ইহাইয়া সিনওয়ার, মহম্মদ দেইফের মত শীর্ষ হামাস নেতৃত্বের ছোটবেলা কেটেছে। ইজরায়েলী সেনার দাবি, খান ইউনুস হামাসের অন্যতম ঘাঁটি। এতদিন ইজরায়েল বলে আসছিল, হামাসের মূল ভরকেন্দ্র গাজা শহর এবং আল শিফা হাসপাতাল। গাজা শহর গুড়িয়ে দেওয়ার পরেও হামাসকে বাগে আনতে পারেনি ইজরায়েল। চলছে মৃত্যু মিছিল। তারমধ্যেই ইজরায়েলের দাবি, গাজা নয়, বরং খান ইউনুস থেকে পরিচালিত হয় হামাস। 

খান ইউনুসের পাশাপাশি উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। গত ২ মাস ধরে হামলা চালিয়েও জাবালিয়ার দখল নিতে পারেনি ইজরায়েল। ইজরায়েলের তরফে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পরে বৃহস্পতিবার অবধি ৮৮জন সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছে। যদিও পালটা হামলায় ৫ হাজার হামাস সদস্যকে হত্যার দাবিও করেছে ইজরায়েল। কিন্তু হামাস বলে কাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেই তথ্য স্পষ্ট করেনি ইজরায়েল। 

খান ইউনুসে হামলার ফলে নতুন করে মিশর সীমান্ত লাগোয়া রাফা শহরের দিকে পালিয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। রাফা শহরে ২লক্ষ ৮০ হাজার মানুষের বাস। যুদ্ধ শুরুর পরে সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ মানুষ এই শহরে আশ্রয় নিয়েছে। সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে, রাফা শহরে বৃহস্পতিবার সকালে ইজরায়েল হামলা চালানোয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ইজরায়েলের হামলায় মহিলা এবং শিশু সহ ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রাফায় রাষ্ট্রসংঘের একটি গুদামেও হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। 

রাফায় আশ্রয় নেওয়া প্যালেস্তিনীয়রা বলছেন, এরপর আমাদের মিশরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু সেই পলায়ন ঠেকাতে রাফা সীমান্তে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করেছে মিশর। মিশরের বক্তব্য, গাজা ছেড়ে প্যালেস্তিনীয়রা মিশরে চলে গেলে তাঁদের আর ফেরত আসতে দেবে না ইজরায়েল। তাই কোনও অবস্থাতেই রাফা সীমান্ত হয়ে মিশরে ঢুকতে দেওয়া হবেনা প্যালেস্তিনীয়দের। 

Comments :0

Login to leave a comment