মানবাধিকার লঙ্ঘন নাকি আলোচনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। এই যুক্তিতে ইজরায়েলের উগ্র দক্ষিণপন্থী সশস্ত্র বাহিনী নেতজা ইহুদাকে সামরিক সহায়তা দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজার আরেক স্কুলে মারাত্মক হামলার পর শনিবার আমেরিকার ভূমিকায় ক্ষোভ বেড়েছে।
গাজার আল-তাবিন স্কুলে অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে বোমা ফেকেছে ইজরায়েল। একশোর বেশি প্যালেস্তিনীয় নিহত। আহত বহু। প্যালেস্তাইন রেড ক্রেসেন্টের মুখপাত্র নেবাল ফরশাখ বলেছেন, ‘‘আমরা স্তম্ভিত, আমরা ভীত। ওই স্কুলবাড়ির ভেতরে দেহের স্তূপ। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আহতদের সাহায্য করবেন কিভাবে বুঝতে পারেননি অনেকটা সময়। একের পর দেহ আর দেহের খণ্ডাংশ টপকে আর্তদের কাছে পৌরছাতে হয়েছে তাঁদের। কাছের সব হাসপাতালে আগে থেকেই ভর্তি আহত বহু মানুষ। উপচে পড়ছে হাসপাতাল। চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছে আহতদের।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ইজরায়েলকে ৩৫০ কোটি ডলার অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করা হবে। এই অর্থে আসলে ফুলে ওঠে আমেরিকার বহুজাতিক অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ব্যবসা। গাজায় সংঘাত পশ্চিম এশিয়ার লেবাননে ছড়িয়ে পড়ার সময়ে এই মদত যুদ্ধকে আরও ছড়িয়ে দেবে, আশঙ্কা জানাচ্ছে বহু অংশ।
প্যালেস্তাইনের আরেক অংশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও সমানে আক্রমণ চালাচ্ছে ইজরায়েলের সেনা। গুলিতে অন্তত পাঁচ প্যালেস্তিনীয় আহত হয়েছেন। বিশ্বজুড়ে ধিক্কারের মুখে পশ্চিমী বিভিন্ন দেশ অন্তত মৌখিকভাবে খেদ জানিয়েছে আল তাবিন স্কুলে হামলার। বেলজিয়াম বলেছে, লাগাতার নাগরিক আশ্রয়ের এলাকায় বোমা ফেলা মেনে নেওয়া যায় না। ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ‘‘এমন ভয়াবহ আক্রমণে আমরা শঙ্কিত।’’ সেই সঙ্গে প্যালেস্তাইনের হামাসের ঘাড়েও দায় চাপিয়ে ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রী বলেছেন, দেশের নাগরিকদের বিপদে ফেলার নীতি থেকে সরে আসতে হবে হামাসকে।’’
গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে আন্দোলনে নামা বিভিন্ন অংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন আমেরিকার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তিনিই দেশের উপরাষ্ট্রপতি। তাঁর দেশই ইজরায়েলকে বিপুল অঙ্কের সামরিক সহায়তা জুগিয়ে যাচ্ছে। আর বিক্ষোভের মুখে হ্যারিস বলেছেন, ‘‘গাজায় যুদ্ধবিরতির সময় এসে গিয়েছে। অ্যারিজোনায় প্রচারসভার মধ্যেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। হ্যারিস বলেন, ‘‘আমার অবস্থান স্পষ্ট। যুদ্ধবিরতি করতে হবে। প্যালেস্তাইন এবং ইজরায়েলকে পণবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।’’
এদিন ইরানের সুরক্ষা পরিষদের সচিব আলি শামখানি বলেছেন, ‘‘ইজরায়েলের লক্ষ্যই যুদ্ধবিরতির প্রয়াস বানচাল করা। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। ইজরায়েল বারবার দেখিয়েছে যে তারা আন্তর্জাতিক আইন মানে না।’’ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার এবং মিশরও।
ইজরায়েল বারবার গাজার নাগরিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। প্রতিবারই বলেছে হামাসের গোপন কেন্দ্র পরিচালনার হচ্ছে এি জায়গা থেকেই। এখনও আন্তর্জাতিক স্তরে নিরপেক্ষ কোনও প্রতিষ্ঠান এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি।
GAZA SCHOOL ATTACK
ইজরায়েলকে ফের সহায়তা, স্কুলে হামলার পর ধিক্কার আমেরিকাকে
×
Comments :0