Memari

অভিনব পদ্ধতিতে প্রতারণা , মেমারিতে গ্রেপ্তার তিন প্রতারক

জেলা

দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল একটি গ্যাং। এই গ্যাংয়ের খপ্পরে পড়ে অনেকেই, বিশেষ করে বয়স্ক মহিলারা প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আসছিল। পুলিশের কাছে এই প্রতারণার খবর থাকলেও চক্রের পান্ডারা নাগালে আসছিল না। ফলে পুলিশের ইন্টেলিজেন্স বিভাগ এই চক্রটিকে ধরতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। 
সেইমতো পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল মেমারি শহরের বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে জনবহুল বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় এই নজরদারি জোরদার করা হয়েছিল। আর তার পরই মঙ্গলবার মেমারি থানার পুলিশ গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মেমারি বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায়। খবর ছিল, ৩ জন অজানা ব্যাক্তি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছে এলাকায়। এরপরই পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তিনজন সন্দেহভাজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। 
কিভাবে তারা মানুষকে প্রতারিত করত?  প্রথমে তারা কিছু কাগজের বান্ডিল তৈরি করতো। যেগুলোর ওপরে কিছু ১০০ টাকা বা ৫০০ টাকার নোট দিয়ে আটকানো থাকতো। ভেতরে কিছু নকল নোট ও কাগজ দিয়ে বাকি বান্ডিল ভরা থাকতো। ওপর থেকে দেখে মনে হতো যেনো হুবহু টাকার বান্ডিল। প্রতারকরা সাধারণত বাস স্ট্যান্ড বা স্টেশনের মত জায়গায় কোনো বয়স্ক মহিলাকে টার্গেট করতো। এরপর এই গ্যাং এর একজন সাধারণ যাত্রী সেজে তার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো।
অন্যদিকে আরেকজন গ্যাং মেম্বার, নোটের বান্ডিল গুলো নিয়ে এসে বলতো যে, কেউ একজন ভুল করে ফেলে গেছে এবং সেগুলি নিয়ে সে এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। এরপর নোটের বান্ডিল গুলোকে তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব রাখতো এবং বিভিন্ন অছিলায় মহিলাটিকে প্রলোভিত করে নকল নোটের বান্ডিল গুলির পরিবর্তে তার গয়না অলংকার হাতিয়ে সেখান থেকে চম্পট দিতো।

দীর্ঘ জেরার পর তাদের এই অভিনব প্রতারণার রহস্য ফাঁস হয়। ধৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। 
ধৃতদের নাম নির্মল রায়(৫২) টিটাগড়ের বাসিন্দা। কল্যািনীর বাসিন্দা মলিন দাস(৬৫)। ৫২ বছর বয়সী গোপাল শর্মা,  বাড়ি চাকদা এলাকায়। বুধবার ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে বর্ধমান আদালতে পেশ করে মেমারি থানার পুলিশ। আদালত ধৃতদের মধ্যে গোপাল শর্মাকে ২৪ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে এবং নির্মল রায় ও মলিন দাসকে ২৪ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

Comments :0

Login to leave a comment