Sitalpur Gram Panchayat

হাইকোর্টের নির্দেশে পঞ্চায়েত বোর্ড সিপিআই(এম)'র

রাজ্য জেলা

যেকোনো ভাবেই বোর্ড গঠন করতে হবে আর তার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশকে ব্যবহার করে বিরোধীদের উপর আক্রমনের পরম্পরা তৃণমূলের। সাধারণ মানুষের লড়াই এই দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে। অবৈধ পঞ্চায়েত বোর্ড মেনে নেওয়া হবেনা। তাই লড়াই ছিল শেষতক্। রাস্তার ও আদালতের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে জনগণেরই। হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড সিপিআই(এম)'র। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ সিপিআই(এম) পঞ্চায়েত সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে আয়োজিত সভায় কয়েকশ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেই সভায় নব নির্বাচিত প্রধান আব্দুল জব্বার সহ অন্যান্যদের সংবর্ধনা দিয়ে আগামীর লড়াইয়ে আরও দৃঢ় থাকার বার্তা দিয়েছেন সিপিআই(এম)'র জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, পরিতোষ পট্টনায়েক, শান্তনু দাস, করুনাশংকর ভৌমিক, সন্দীপ জানা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 
নির্বাচন পর্বে পুলিশের করা একটি মিথ্যা মামলায় পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিনই গ্রেপ্তার করা হয় সিপিআই(এম)'র প্রধান পদপ্রার্থীকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার ব্লকের শীতলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় প্রশাসনের নির্লজ্জ ভূমিকায় স্তম্ভিত হয়েছিল সাধারণ মানুষ। সিপিআই(এম)'র পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুল জব্বর সহ অন্যান্য সদস্যরা গত ২০২৩ সালের ১১ আগষ্ট বোর্ড গঠনের দিন শীতলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত হয়। কিছু পরেই নন্দকুমার থানার পুলিশ বাহিনী পঞ্চায়েত অফিসের ভিতর থেকেই আব্দুল জব্বার কে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের পর্বে তৃণমূলের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে। সম্পুর্ন অনৈতিক এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে সাধারণ মানুষ। পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। বিরোধীশূন্য অবস্থায় বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। এই ঘটনায় মামলা হয় তমলুক জেলা আদালতে। জামিন হয় আব্দুল জব্বারের। তৃণমূলের বোর্ড গঠন করা অনৈতিক বলে হাইকোর্টে মামলা হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট জানায় বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া অবৈধ। ব্লক অফিস থেকে প্রশাসন নিয়োগ করা হয় হাইকোর্টের নির্দেশের পরে। মাঝে  হাইকোর্টের বিচারক অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন পুনরায় বোর্ড গঠন করতে হবে সমস্ত জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে। সেই মতো নন্দকুমার ব্লকের বিডিও'র তত্ত্বাবধানে বিডিও অফিসেই বোর্ড গঠন হয়। জয়ী হয় সিপিআই(এম)। প্রধান নির্বাচিত হন আব্দুল জব্বার। এর পরেই তৃণমূল ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে। দেড় বছর ধরে মামলা চলে হাইকোর্টে। অবশেষে জয় হয় সাধারণ মানুষেরই। গত সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অমৃতা সিনহার নির্দেশকে মান্যতা দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশের দিনেই শীতলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষজন একত্রিত হয়ে নিজেদের মতো করে বিজয় মিছিল করে। বাড়ি বাড়ি মিষ্টি বিতরণ হয়। জয়ের উদযাপন হয় কয়েকদিন ধরে। এদিনের সভায় সিপিআই(এম)'র প্রধান বলেন "লুটের পঞ্চায়েত হতে দেব না। সাধারণ মানুষের পঞ্চায়েত হবে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবে দলমত নির্বিশেষে। চারিদিকে চুরি দুর্নীতির ছবির মাঝে আমাদের পঞ্চায়েত হবে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত। বিকল্পের বার্তা দিয়ে সেরা পঞ্চায়েত গড়ে তোলার লক্ষে শপথ নিয়ে আমরা।"

Comments :0

Login to leave a comment