RAHUL GANDHI

লোকো পাইলটদের সঙ্গে সাক্ষাতে রাহুল, অবান্তর সমালোচনা রেলের

জাতীয়

RAHUL GANDHI

ভারতীয় রেলের লোকো পাইলটদের সঙ্গে শুক্রবার দেখা করেন সংসদের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সেই সাক্ষাতের কিছু পরেই ভারতীয় রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘‘গোটাটাই সাজানো, সিনেমার মত। বাইরে থেকে আনা লোকো পাইলটদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাহুল গান্ধী।’’ রেলের এই বিবৃতির পরে পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রেলওয়ে কর্মচারীদের ইউনিয়ন। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘‘প্রকৃত ইস্যুতে নজর না দিয়ে অবান্তর বিষয়ে কথা বলছে রেল।’’

শুক্রবার নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে লোকো পাইলটদের বিশ্রামাগারে গিয়ে লোকো পাইলটদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাহুল। রাহুলকে কাছে পেয়ে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন ভারতীয় রেলের চালকরা। এরই প্রেক্ষিতে নর্দান রেলওয়ে বা উত্তর ভারত রেলের মুখপাত্র জানান, ‘‘যেই লোকো চালকদের সঙ্গে রাহুল গান্ধী দেখা করে কথা বলেছেন, তাঁরা কেউ নর্দান জোনের নয়। আমার মনে হয় বাইরে থেকে তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল।’’

এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছে রেলওয়ে কর্মচারীদের ইউনিয়নগুলি। তাঁদের বক্তব্য, লোকো পাইলটরা রেলের কোন ডিভিশনে কর্মরত সেটা মূল বিষয় নয়। তাঁদের সমস্যাগুলি এক কিনা সেটাই মূল বিষয়। চালকদের সমস্যা সমাধানে নজর না দিয়ে অবান্তর বিষয়ে মন্তব্য করছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।

রাহুল গান্ধীর সঙ্গে লোকো পাইলটদের সাক্ষাতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের দক্ষিণ জোনের সভাপতি আর কুমারেশন বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধী রেলের বিভিন্ন ডিভিশনের পাইলটদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রেলের চালকরা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি সবার সঙ্গে কথা বলেন, আলাদা করে নর্দান ডিভিশনের চালক খুঁজে বের করেননি তিনি।’’

লোকো পাইলটদের বক্তব্য, সারা দেশেই লোকো পাইলটকদের সমস্যা একই ধরণের। দীর্ঘক্ষণ রেল ইঞ্জিন চালাতে হয় বিশ্রাম ছাড়া। সাপ্তাহিক বিশ্রাম মেলেনা। দীর্ঘ যাত্রাপথে শৌচাগারের সুবিধা পাওয়া যায়না। সময়ে খাবার খাওয়া যায়না। সেই সমস্যাগুলির সমাধান না করে চালকদের ডিভিশন বাছতে বসেছে ভারতীয় রেল।

ইন্ডিয়ান রেলওয়ে লোকো রানিংমেন অর্গানাইজেশনের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ কমলেশ সিং বলেছেন, ‘‘ রেলের রানিং রুমে বাইরের ডিভিশন থেকে আসা চালকরা বিশ্রাম নেন। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে নর্দান ডিভিশনের চালক থাকার কথা নয়।’’

রেল কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ স্পষ্ট করেছেন, রাহুল গান্ধী রানিং রুমে ঢোকেননি। তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে চালকদের সঙ্গে কথা বলেন, কারণ রানিং রুমে চালকরা বিশ্রাম নেন, তিনি তাঁদের বিশ্রাম ভঙ্গ করতে চাননি। 

কমলেশ সিং বলেছেন, ‘‘লোকসভার বিরোধী দলনেতা চলে যাওয়ার পরে রেলের আধিকারিকরা এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন, আমাদের সমস্যার কথা জানতে চান। এই প্রথমবার আধিকারিকরা এত তৎপর হয়ে আমাদের সমস্যার কথা জানতে চাইলেন। রাহুল গান্ধীকে আমরা যেই অভিযোগগুলি করেছি, রেলের আধিকারিকদেরও একই কথা বলেছি আমরা।’’

কর্মচারী সংগঠনগুলির কথায়, চালকদের সমস্যার কথা রেলের অজানা নয়। ইউনিয়নগুলির তরফে দীর্ঘদিন ধরে চিঠি দিয়ে সেগুলি জানানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাহুল গান্ধীর আসার ফলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তারফলে রেল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে লোকো পাইলটদের সঙ্গে দেখা করে কিছুটা হলেও ক্ষোভে প্রলেপ দিতে। 

Comments :0

Login to leave a comment