জনপ্রিয় সিনেমার অনুকরণে কথাটা ছড়িয়েছিল, ‘লা পাতা জেন্টলম্যান’। কারণ নির্বাচন পর্বে একের পর এক অভিযোগ জানালেও প্রতিকার করছিল না নির্বাচন কমিশন। গণনার ঠিক আগের দিন, সোমবার, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দাবি গণনায় কারচুপি হবে না।
‘‘ভোট গণনায় কোন কারচুপি হবে না।’’ এদিন দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। সেই সঙ্গে রসিকতা সুরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এখন লেখা যেতে পারে জেন্টলম্যান ফিরে এসেছেন।’’
কমিশনকে ঘিরে অভিযোগ তীব্র হওয়ার কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একের পর এক ঘৃণাভাষণ। বিদ্বেষ না ছড়ানোর স্পষ্ট নির্দেশিকা ছিল কমিশনের। তাকে হাওয়ায় ছুঁড়ে ফেলে প্রচার চালিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। বারবার অভিযোগ জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। তার ওপর প্রার্থী প্রত্যাহার করানো, প্রার্থী হতে না দেওয়ার অভিযোগও কম নয়। এবার বিরোধী দলগুলি গণনা ঘিরেও নজরদারির কড়া দাবি তুলেছে।
কুমার যদিও সাফল্যের দাবিতেই মগ্ন ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘‘অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে দেশের ৬৪.২০ কোটি নাগরিক নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সারা দেশে কেবল ৩৯টি বুথে পুননির্বাচন হয়েছে, আগের বারের চেয়ে কম। মদ, টাকা বিলি করা বন্ধ করা গিয়েছে অনেকটাই। ৪৩৯৯ কোটি টাকার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনার।’’
তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মণিপুরে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চম দফার নির্বাচন থেকে হিংসার ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধী এজেন্টদের মারধর, বুথ জ্যামের অভিযোগ উঠেছে। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা জুড়ে অবাধে ভোটলুঠ করেছে তৃণমূল। ওই কেন্দ্রে পুননির্বাচনের দাবি জানানো হলেও কমিশনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সিপিআই(এম) নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বার বার দাবি করে আসা হচ্ছে যে গণনা কেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপি হতে পারে। বিশেষ করে এরাজ্যে গণনা কেন্দ্রও লুট করতে পারে তৃণমূল। এদিন সকালে কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে গিয়েছিলেন সিপিআই(এম) প্রার্থীরা। কথা বলেছেন তাঁর সাথে। আর রবিবারই দিল্লিতে কমিশনে গিয়ে নিজেদেরই বিধি পালনের দাবি জানিয়ে এসেছে ‘ইন্ডিয়া’-র প্রতিনিধিদল।
দিল্লিতে রাজীব কুমার দাবি করেছেন যে গণনা কেন্দ্রে কোন কারচুপির সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘‘দেশে মোট সাড়ে ১০ লক্ষ কাউন্টিং বুথ হয়েছে গোটা দেশে। ৩০-৩৫ লক্ষ পোলিং এজেন্ট থাকবেন বাইরে। সিসি ক্যামেরা থাকবে।’’
তারপরই তিনি বলেন, ‘‘মানুষের ভুল হতেই পারে। তবে গণনায় কোন কারচুপির সম্ভাবনা নেই। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিরোধীদের পক্ষ থেকে গণনা সংক্রান্ত যা যা অভিযোগ জানানো তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’
এদিন কমিশন স্পষ্ট করেছে যে সকাল আটটায় ভোটগণনা শুরু হবে পোস্টাল ব্যালট দিয়ে।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত বিষয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন যে, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে থাকবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।
Comments :0