প্রবীর দাস- হাসনাবাদ
বুধবার ইনসাফ যাত্রা ২৭ দিনে পা রাখলো। ৩ নভেম্বর উত্তরবঙ্গ থেকে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল। ইনসাফ যাত্রা শেষ করে ৭জানুয়ারি যৌবনের ডাকে জনগণের ব্রিগেড সমাবেশ হতে চলেছে। সেই উপলক্ষে বুধবার বিকালে হাসনাবাদ ও ভেবিয়ায় জনসভার আহ্বান জানায় ডিওয়াইএফআই হাসনাবাদ লোকাল কমিটি। সভাদুটিতে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন যুবনেতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা শতরূপ ঘোষ, যুবনেতা দীপঙ্কর বণিক, সোনালী মজুমদার, হারুন অল রসিদ, ছাত্র নেতা মৈনাক মুখার্জি। হাসনাবাদে বনবিবি সেতু সংলগ্ন সভায় সভাপতিত্ব করেন সুকান্ত মুখার্জি ও ভেবিয়া বাসস্ট্যান্ডের সভায় সভাপতিত্ব করেন মোক্তার গাজি। দুটি সভাতেই যৌবনের অংশগ্রহণ ছিল নজরকাড়া। উভয় সভায় এনআরসি, সিএএ নিয়ে শতরূপ ঘোষ বিজেপি এবং তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, বাবুল সুপ্রিয় বিজেপিতে থাকাকালীন এনআরসি নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন তাঁকে মমতা ব্যানার্জি দলে নিলেন মন্ত্রীও করলেন। আর এনআরসির বিরুদ্ধে যে আনিস খান লড়াই করছিল তাঁকে পুলিশ পাঠিয়ে খুন করলো। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে এই রাজ্যে এনপিআর এর কাজ শেষ করে ফেলেছে মমতা ব্যানার্জি। আসলে উনি আরএসএসের নির্দেশে রাজ্যে সরকার পরিচালনা করছেন।
ইনসাফ যাত্রা প্রসঙ্গ টেনে এনে শতরূপ ঘোষ বলেন, কোমরের জোরে, মেরুদন্ডের জোরে, মাথা উঁচু করে ডিওয়াইএফআই ইনসাফ যাত্রা শুরু করেছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই ইনসাফ মাত্রাকে উষ্ণ অভিনন্দনে ভরিয়ে দিচ্ছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের মানুষ আর একটি যাত্রার সাক্ষী থেকেছে। কী সেই যাত্রা? কয়লা,বালি,পাথর,গরু চোর পিসির ভাইপোর নবজোয়ার যাত্রা। কী দেখলো রাজ্যের মানুষ? বিডিও পুলিশ, দুষ্কৃতী বেষ্টিত দুর্বৃত্তায়নের জোয়ার যাত্রা। বামফ্রন্ট সরকার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দিয়ে তিল তিল করে এই রাজ্য টাকে গড়ে তুলেছিল। কৃষকের মুখে হাসি ছিল। বছর বছর টেট এস এস সি হতো। যুবকের মুখে হাসি ছিল। রাত বিরেতে মহিলারা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতো। সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করতো। সম্প্রতির পরিবেশ ছিল। বিজেপিকে হাত ধরে ডেকে আনলো। জাতপাত, ধর্ম বর্ণের মধ্যে দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দিল। ঘোলা জলে মাছ ধরতে এই মমতা ব্যানার্জি বিজেপিকে সুবিধা করে দিল। প্রতিদিন নতুন নতুন চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে রাজে। সামনে লোকসভা ভোট। মিডিয়ার বাইনারি শুরু হয়ে গেছে। সভায় আসা যুবসমাজের একটি অংশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। ওরা কৃষকের ফসলের ন্যায্য দামের কথা বলবে না। খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির আওয়াজ তুলবে না। বেকারের চাকরি, মূল্যবৃদ্ধি, মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো আলোচনা টেবিল রাখবে না। জীবন জীবিকার লড়াই আমাকে আপনাকে করতে হবে। যে লড়াইয়ে আহ্বান জানিয়ে ইনসাফ যাত্রা এগিয়ে চলেছে বিগ্রেডমুখি হয়ে। পৌরসভা, পঞ্চায়েতে লড়াই করেছেন শাসকের বুকে কাঁপন ধরিয়ে। সামনে আরও বড় লড়াই। মানুষকে সংগঠিত করুন। শক্তিশালী করুন প্রতিটি বুথকে। কেন্দ্র থেকে আরএসএস পরিচালিত বিজেপিকে হটাতে না পারলে রাজ্য থেকে চোর দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলকে তাড়ানো যাবে না।
Comments :0