২৫ জুন থেকে শুরু হচ্ছে কলকাতা ফুটবল লিগ। বাংলা ফুটবলের অন্যতম ঐতিহ্য এই কলকাতা প্রিমিয়ার লিগকে ঘিরে, জোর অনুশীলনে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ফুটবল ক্লাব সাদার্ন সমিতি।
প্রসঙ্গত, এবার কলকাতা লিগে দুটি ডিভিশনের মধ্যে সংযুক্তিকরণ ঘটেছে। প্রিমিয়ার-এ এবং প্রিমিয়ার-বি ডিভিশন মিলিয়ে, অনেকগুলি দল এবার লিগের মূলপর্বে খেলবে। ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানো, ফুটবলারদের আরও বেশি করে ম্যাচ টাইম দেওয়া এবং বাঙালি ফুটবলারদের মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত। টুর্নামেন্টকে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক করার লক্ষ্যে থাকছে সুপার সিক্স।
আর এইসবকিছুর মাঝে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় সাদার্নও। হেডকোচ রঞ্জন ভট্টাচার্যের অধীনে, দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে ইতিমধ্যেই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে তাঁরা। এইবছর লিগে নেই কোনও বিদেশি ফুটবলার। ফলে, বাংলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছেলেদের নিয়েই তৈরি হয়েছে সাদার্নের দল। ফিজিক্যাল ট্রেনিং, সিচুয়েশন প্র্যাকটিস, ফ্রিকিক, ম্যাচ প্র্যাকটিস, পাসিং এবং গোলকিপিং মিলিয়ে চলছে চূড়ান্ত অনুশীলন।
গত মরশুমে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলের হয়ে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছেন সৌগত হাঁসদা। তিনি এবার সই করেছেন সাদার্ন সমিতিতে। অনুশীলন শেষে সৌগত জানালেন, “প্র্যাকটিসে নিজের ১০০% দিচ্ছি। চেষ্টা করছি নিজেকে উন্নত করার। আশা করছি ভালো রেজাল্ট পাবো।“
অন্যদিকে কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “ বিদেশি ফুটবলারদের বাদ দিয়ে লিগ হচ্ছে। সঠিক সময়ে, সঠিক পদক্ষেপ। আমি সেইভাবেই ফোকাস করছি। আগে নতুন যে বাঙালি ছেলেগুলোকে খেলাতে পারতাম না, তাঁদের এবার খেলাতে পারব। এইবছর কলকাতা লিগ থেকে অনেক নতুন মুখ সামনে আসবে।“
সাদার্ন সমিতি কর্তা সৌরভ পাল বলছেন, “ আমাদের মতো ক্লাবের পক্ষে অর্থ জোগাড় করাটা খুব কঠিন একটা বিষয় হয়। আবার এটাও ঠিক, যখন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডানের মতো টিমগুলোর সঙ্গে খেলতে পারব তখন স্পনসরশিপ আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। আমার যতটা সামর্থ্য, সেই অনুযায়ী টিম গড়েছি। বাংলার ছেলেরা অবশ্যই দলে আছে, বাইরের ছেলেরাও আছে। আই লিগ খেলা ফুটবলারও দলে আছে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে, ময়দানের অন্যতম কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য দায়িত্বে আছে। আমরা আশাবাদী। মশলা যেমন ভালো হয়েছে, রাঁধুনীও ভালো হয়েছে। ফলে আশা করাই যায় ভালো ফুটবল সাদার্ন সমিতি খেলবে।“
অন্যদিকে, এই প্রথম কলকাতা লিগের কোনও দলের সহকারী কোচ হিসেবে একজন মহিলা প্রশিক্ষক থাকছেন। সাদার্নের সহকারী কোচ সুজাতা কর। এই প্রসঙ্গে ক্লাব অফিসিয়াল জিনিয়া রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, “সাদার্ন সমিতি সবসময় ব্যতিক্রমী। কোচ মানে কোচই। সুজাতাদির মতো কোচ পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। রঞ্জনদা এবং সুজাতাদির কম্বিনেশনটা খুব ভালো কাজ করবে। এই বছরটা পুরোটাই আলাদা। কিন্তু এইবছর যেহেতু সব দেশের খেলোয়াড় এবং বাঙালিরাই মূলত খেলছে, ফলে তুল্যমূল্য লড়াই হবে। আমাদের ঘরের ছেলেরা উঠে আসার একটা সুযোগ পাবে। সেই হিসেবেই আমরা দল গঠন করেছি।“
সবমিলিয়ে আসন্ন মরশুমে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিতে মরিয়া সাদার্ন।
Comments :0