CHANDIGARH MAYOR ELECTION

‘গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছে চন্ডীগড়ে’, সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনা মোদীর দলকে

জাতীয়

CHANDIGARH MAYOR ELCTION AAP CONGRESS BJP SUPREME COURT NARENDRA MODI নির্বাচনী কারচুপির অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আপ সমর্থকরা।

‘‘এটা দিনের আলোর মত স্পষ্ট, যে চন্ডীগড় কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের সময় প্রিসাইডিং অফিসার ব্যালট পেপারে কারচুপি করেছেন। এই ভাবে নির্বাচন করা যায় নাকি? গণতন্ত্রের নামে প্রহসন। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারের শাস্তি হওয়া উচিত।’’

চন্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের শুনানিতে ঠিক এই কথাগুলি বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। মেয়র নির্বাচনের ভিডিও এবং সব ব্যালট পেপার পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজস্ট্রার জেনারেলকে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘‘এভাবে গণতন্ত্রের হত্যা করতে দেওয়া হবে না।’’ আরও বলেছে, প্রিসাইডিং অফিসার যেন মনে রাখেন যে সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ভূমিকা নজরে রাখছে।

এদিনই সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন যে দেশের মেজাজ বুঝতে পারছেন তিনি। এনডিএ চারশোর বেশি আসন পাবে। বিজেপি একাই ৩৭০ আসন পাবে। বিরোধীদের প্রশ্ন, চন্ডীগড়ে গা জোয়ারি ভোটের ফলকেও ‘মানুষের মেজাজ’ মনে করছেন কিনা মোদী। ‘গণতন্ত্র হত্যার’ দায় এড়াতে পারেন না মোদী। 

কারচুপির নির্বাচনে জয়ী মেয়কে অভিনন্দ জানিয়েছিলেন চন্ডীগড়ের বিজেপি সাংসদ কিরণ খের। বিজেপি’র ভূমিকা বেআব্রু হয়েছে ফের।  

প্রসঙ্গত, চন্ডীগড়ে মেয়ার নির্বাচনের সময় আপ-কংগ্রেসের মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থনে পড়া ৮টি ব্যলটকে অবৈধ ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মাসিহ। ভোটে আপ এবং কংগ্রেসের যৌথ প্রার্থী কুলদীপ কুমার ধালোর ১৬ ভোট পেয়েছিলেন। ১২ জন কাউন্সিলর বিজেপি’র পক্ষে ভোট দেন। পরিষ্কার হার হয় বিজেপি’র। কিন্তু সেই রায়কে উলটে দিতে ৮টি ব্যালট অবৈধ ঘোষণা করা হয়। 

এই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আপের পরাজিত মেয়র পদপ্রার্থী কুলদীপ ধালোর। সোমবার প্রধান বিচাপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। 

আপ-কংগ্রেসের তরফে আদালতের সামনে একটি ভিডিও পেশ করা হয়। সেখানে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, ব্যালট পেপারে দাগ দিচ্ছেন প্রিসাইডিং অফিসার। পরবর্তীকালে সেই দাগের কারণে ৮টি ব্যালট বাতিল ঘোষণা করেন তিনি। 

সেই ভিডিও দেখেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, ‘‘গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’’

এদিন সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি চন্ডীগড় কর্পোরেশনে হতে চলা বৈঠক স্থগিত রাখতে হবে। এর পাশাপাশি মেয়র নির্বাচনের সমস্ত তথ্য প্রমাণ পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা রাখতে হবে। একইসঙ্গে ব্যালট পেপার এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফিও সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে রেজিস্ট্রার জেনারেলের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ যায় কেন্দ্রশাসিত চন্ডীগড়ের ডেপুটি কমিশনারের কাছে। 

সুপ্রিম কোর্ট প্রিসাইডিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার। 

প্রসঙ্গত, চন্ডীগড় কর্পোরেশনের বিজেপি কাউন্সিলর অনিল মাসিহ’কে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সমস্ত নিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন বলে আপ-কংগ্রেস শিবিরের দাবি। 

জানুয়ারি চন্ডীগড় কর্পোরেশনে মেয়র নির্বাচন হয়। ৩৫ ওয়ার্ডের কর্পোরেশনের আপ-কংগ্রেসের ২০জন সদস্য রয়েছে। বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১৫। নির্বাচনে ১৬টি ভোট পেয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী মনোজ সোনকর। মেয়র নির্বাচনে ভোট দেন চন্ডীগড়ের বিজেপি সাংসদ কিরণ খের। উল্টোদিকে আপ-কংগ্রেসের পক্ষে নিশ্চিত ভাবে ২০টি ভোট থাকলেও ৮টি ব্যালট বাতিল করা হয়। এই কারচুপির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আপ-কংগ্রেস।

আদালতের রায় আসার পরে কর্পোরেশনের সামনে রিলে অনশনে বসেন আপ কাউন্সিলররা। তাঁদের দাবি, অবৈধ মেয়রকে সরাতে হবে এবং ‘ব্যালট চোর’ অনিল মাসিহ’কে গ্রেপ্তার করতে হবে। 

Comments :0

Login to leave a comment