TMC VIGILANTISM

মুখ্যমন্ত্রীর ধর্ণায় হাজির থাকইতে হবে, পঞ্চায়েত কর্মচারীদের ফতোয়া তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের

রাজ্য

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWS রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রতীকি ছবি।

কেন্দ্র রাজ্যের পঞ্চায়েত বরাদ্দ আটকে রেখেছে। অবিলম্বে বকেয়া রাজ্যকে দিতে হবে। এই দাবিতে বুধবার ধর্মতলায় ধর্ণা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গোটটা হবে তৃণমূলের ব্যানারে। সেই সভায় যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্মীদের কার্যত ফতোয়া দিয়েছে তৃণমূল। অভিযোগ, কোন কোন কর্মচারী এই কর্মসূচিতে যোগ দিলেন না, তারও হিসেব করার নির্দেশ দলীয় ভাবে দিয়েছে তৃণমূল। 

তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পঞ্চায়েতি রাজ রাজ্য শাখার সভাপতি প্রদীপ বাউলী’র নামে একটি হোয়াটস্যাপ নির্দেশিকা বেরিয়েছে। সেখানে তিনি উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদীয়া, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার নাম করে নির্দেশ দিয়েছেন, এই ৯টি জেলার প্রত্যেকটি থেকে ৫০০ করে পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্মচারীকে ধর্মতলার সভায় অংশ নিতে হবে। 

তাঁর নির্দেশে তিনি লিখেছেন, ‘‘উপস্থিতিটা বাধ্যতামূলক। যারা যারা উপস্থিত হবেন না তাদের নামের তালিকা ও আলাদা করে জমা করবেন।’’

এখানেই শেষ নয়। দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য কিভাবে ক্যাজুয়াল লিভের আবেদন করতে হবে ব্লক এবং পঞ্চায়েত স্তরে, তারও ছক ‘মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড ডকুমেন্ট’ করে পাঠিয়েছেন প্রদীপ বাউলী। 

এই প্রসঙ্গে বিরোধীদের বক্তব্য, এটা প্রশাসনে দলতন্ত্রের নিকৃষ্টতম উদাহরণ। ২০১১ সালের পর থেকে সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ধর্মঘটের দিন হাজারো অসুস্থতা সত্ত্বেও অফিসে উপস্থিত থাকতে হয়। সেইদিন হাজিরা না থাকলে ডায়াস নানের কবলে পড়তে হয়। খোয়া যায় কর্মজীবনের একটি দিন। বিরোধীদের প্রতি সরকারের যখন এই মনোভাব, তখন শাসকদলের কর্মচারীদের দপ্তরের কাজ ফেলে রেখে, ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে ধর্মতলায় যাওয়ার নিদান দেওয়া হচ্ছে। 

সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ, পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন কর্মচারী নিয়োগ হয়না। কর্মীর সংখ্যা কম। তারপরে যদি জেলা থেকে ৫০০ কর্মচারী দলীয় সভায় যোগ দিতে কলকাতা যায়, তাহলে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি তৈরি হবে। বহু জেলায় পঞ্চায়েত দপ্তরে মোট কর্মচারীর সংখ্যা ৫০০’র আশেপাশে। তর্কের খাতিরে তাঁরা সবাই যদি তৃণমূলের সভায় যোগ দিতে যান, তাহলে পরিষেবা কে দেবে? 

একইসঙ্গে কারা কারা মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগ দেবেন না, সেই নামের তালিকা তৈরির নির্দেশ ঘিরেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে। 

ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ডিএ’র দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মচারীরা। তারফলে কর্মচারী মহলে এমনিতেই কোনঠাসা অবস্থা তৃণমূলের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পঞ্চায়েত অধিকার বিষয়ক সভায় পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্মচারীরা না থাকলে সাংগঠনিক ভাবে মুখ পুড়বে তৃণমূলের। তাই অনুপস্থিতির তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়ে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী নেতৃত্ব। 

এত কিছুর পরেও কতজন পঞ্চায়েত কর্মচারী ধর্মতলায় শেষমেষ যোগ দেন, সেটা নিয়ে যদিও যথেষ্ট সন্দিহান এই অংশটি। 

Comments :0

Login to leave a comment