মণ্ডা মিঠাই
আব্বুলিশ
কৃশানু ভট্টাচার্য্য
নতুনপাতা
দলের মধ্যে বোকা ছেলেটা বারে বারে ধাপ্পা খেতো। বারে বারে তাকে খুঁজতে বেরোতে হতো বন্ধুদের। এ বাড়ির পিছন থেকে ও বাড়ির বাগান, সেনেদের পুকুরের ধার, মুখুজ্যেদের গোয়ালঘর সবখানে সে খুঁজে বেড়াতো বন্ধুদের। আর প্রতিবারই সবাইকে পেলেও কেউ একজন পিছন থেকে পিঠে একটা কিল মেরে বলতো- ধাপ্পা।
মজা ছিল কুমির ডাঙ্গায়। যখন তখন যেখানে সেখানে হয়ে যেত দ্বীপ। একবার সেখানে উঠতে পারলেই কুমিরের আর কিছু করার নেই। এদিক ওদিক দেখে আবার বলে ওঠা কুমির তোমার জলকে নেমেছি!
এলাটিং বেলাটিং সইল, কিংবা রুমাল চোরের মধ্যে কোথাও যেন একটা রহস্য ছিল। এই বুঝি কিছু একটা হয়ে গেল। দুটো বাড়ির মাঝখানের মাঠে কিংবা দুটো বাড়ির মাঝখানের জায়গায় কিংবা বড় খেলার মাঠের একটা কোনায় বিকেলবেলা হলেই জমে যেত শৈশব। কলকাকলিতে মুখরিত হতো খেলার মাঠ, ছোটদের পার্ক, কিংবা কোন বড় বাড়ির ছাদ। তারপর একদিন শৈশব হতো কৈশোর। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যেত চোর-পুলিশ খেলা, বন্ধ হতো কুমিরডাঙ্গা। পায়ে আসতো ফুটবল, হাতে ক্রিকেট ব্যাট। আরেকটু বড় হলে ক্যারাম এর স্ট্রাইকার। বাবা কাকাদের তাস খেলার আসরে উকি মারবার অধিকারও মিলে যেত কোন এক সময়।
প্রৌঢ়ত্বে কিংবা আরেকটু বুড়ো হলে, সেই অদ্ভুত সুর গুলো আবার যেন ফিরে ফিরে আসে। ইচ্ছে করে টিকটিকির ডিম কিংবা জিভের ডগায় ইলেকট্রিক বিটনুন এর স্বাদ পেতে। এই সময় দাঁড়িয়ে চোখ চলে যায় অতীতে, দূরে, আরো দূরে। সময় বদলায়, বদলায় শৈশবের বিনোদনের ধারা। অতীত বলে যায়, আব্বুলিশ! অপেক্ষা কর, আমি আবার আসছি।
Comments :0