বাতাসের বেগ কমে গিয়েছে। মাঝে মধ্যে দমকা বাতাস বইলেও ঘূর্ণিঝড় রেমাল এখন শক্তি খুইয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর ঝড়ের এই গতিপ্রকৃতি জানিয়েও বলেছে যে হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে।
রবিবার মাঝরাতে আছড়ে পড়েছিল রেমাল। সোমবারও তার জেরে জনজীবন স্বাভাবিক হয়নি কলকাতায়। স্বাভাবিক নয় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বহু অংশ।
পূর্ব রেলওয়ে জানিয়েছে ইএমইউ কারশেডে জল জমে যাওয়ায় শেওড়াফুলি-হাওড়া এবং চন্দননগর-হাওড়া ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তবে পূর্ব রেলের সাউথ সেকশনে সকাল ৯টা থেকে ট্রেন চলাচল চালু করা হয়েছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ জানাচ্ছে যে হাসনাবাদ, সন্দেশখালি-২, গোসাবা, সাগর, শ্যামপুর-১ এবং হরিণঘাটা ব্লকে অন্তত ৫৪টি গাছ সরানো হয়েছে। দুই জায়গায় বিদ্যুতেরখুঁটি উপড়ে পড়েছিল। সোমবার দুপুরের মধ্যে তা সরানো হয়েছে বলে দাবি বাহিনীর।
গাছ পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে কলকাতা এবং সংলগ্ন বহু এলাকা থেকে। যাদবপুরের হালতুতে গাছ পড়ে গিয়ে বিদ্যুতের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। কলকাতায় অন্তত ৬৮ জায়গায় গাছ পড়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিক হিসেবে জানানো হয়েছে। সল্টলেক এবং রাজারহাটে ৭৫ জায়গায় উপড়ে পড়েছে গাছ।
কলকাতায় সাদার্ন অ্যাভেনিউ, লেক প্লেস, চেতলা, ডিএল খান রোড, ডাফরিন রোড, বালিগঞ্জ রোড, নিউ আলিপুর, বেহালা, গোলপার্ক, হাতিবাগান, জগৎ মুখার্জি পার্ক, কলেজ স্ট্রিটে গাছ উপড়ে পড়েছে।
আলিপুরের আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তর রবিবারই জানিয়েছিল যে কলকাতায় রেমালের প্রভাব পড়বে। তবে তা ২০২০’র আমফানের মতো হবে না। রবিবার বিকেল থেকে প্রায় কোনও যানবাহন দেখা যায়নি। সোমবার দুপুরের পর দু’টি একটি বাস বা অটোর দেখা মিলছে। তবে স্বভাবাকি অবস্থার থেকে অনেক দূরে রয়েছে পরিস্থিতি।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ জানিয়েছে কলকাতার সাদার্ন অ্যাভেনিউ, লেক ভিউ রোড, প্রতপাদিত্য রোড, টালিগঞ্জ ফাঁড়ি, আলিপুর এবং সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউতে জল জমে গিয়েছে। কিছু গাড়ি যা রাস্তায় ছিল, তা-ও ঘোরাতে হয় এই সব রাস্তা থেকে।
বালিগঞ্জ, ঢাকুরিয়া, বেহালা এবং উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েক জায়গায় জল জমে থাকার কারণে যান চলাচল সোমবার স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিমের দাবি, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল সরানোর কাজ চলছে। ড্রেনেজ পাম্প পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার সকাল থেকে প্রায় পাঁচ ঘন্টা মেট্রোর নর্থ-সাউথ করিডোরে পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়নি। বেশ কিছু যায়গায় রুট ভেঙে ভেঙে চালানো হয়েছে ট্রেন। দক্ষিণেশ্বর-গিরিশ পার্ক, কবি সুভাষ-মহানায়ক উত্তর কুমার পর্যন্ত মেট্রোপথে বেলা বারোটা পর্যন্ত গোলযোগ থেকেছে। পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশনের মাঝে ট্র্যাকে ওপর জল জমে থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
তবে রেমালের জেরে হলদিয়া এবং কলকাতা বন্দরের কাজে বিশেষ সমস্যা হয়নি বলে জানাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার ভোট ৬টা পর্যন্ত কাজ যদিও বন্ধ রাখা হয়েছিল।
REMAL MONDAY
শক্তি খুইয়েছে রেমাল, জমা জল, রাস্তায় গাছ, বেহাল জনজীবন
×
Comments :0