প্রবীর দাস
ভরা কোটাল রয়েছে। সন্ধ্যের পর থেকে বাড়ছে নদীর জল। চলছে বৃষ্টি, বাড়তে পারে বেগ। মাটির বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো হয়নি। কাজও হয় না বাঁধের। ‘আজকের রাত ভয়ঙ্কর’- বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির গ্রামে গ্রামে আশঙ্কা এমনই।
সোমবার রাতও জাগবে সুন্দরবনের বহু এলাকা। অবশ্য পঞ্চায়েতের ভরসায় আর বসে থাকছেন না গ্রামবাসীরা। নেমে পড়ছেন বাঁধ বাঁচানোর কাজে।
সন্দেশখালি-২ ব্লকের মণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আতাপুর গ্রামে দেখা গিয়েছে এমনই ছবি। বিকেলেই ফুঁসছিল রায়মঙ্গল। জল যেন ঝাঁপিয়ে বাঁধ টপকে গিলে ফেলতে চাইছে গ্রামকে। বিকেলের পর থেকে জোয়ারের দাপটে কোনোক্রমে টিকে রয়েছে মাটির বাঁধ।
আয়লার পর কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে সুন্দরবনের বাঁধের জন্য অনুদানের সম্মতি আদায় করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস বাধা দিয়েছিল টাকার বরাদ্দে। শেষ পর্যন্ত টাকা আসেনি। আর নিজেরা সরকারে থেকে বাঁধের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ তুলে দিয়েছে।
ইয়াসের পর সুন্দরবনের এই অঞ্চলে বাঁধে মাটি পড়েনি। বাঁধের উচ্চতা গিয়েছে কমে। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির মতো বিস্তীর্ণ এলাকায় স্থানীয়দেরই অভিযোগ, ঠিকদাররাও কাজ করেন না। টাকা মেটায় না সরকার। আর কেন্দ্র বা রাজ্যের সরকার নদীর বুক থেকে পলি তোলার কাজও করে না। ফলে নদীর নাব্যতা কমছে। কমছে জলধারণের ক্ষমতা। বড় ঘূর্ণিঝড়ে জল হু-হু করে ঢুকে পড়ছে গ্রামে।
হিঙ্গলগঞ্জের রূপমারীর গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তারাই স্বীকার করে নিচ্ছেন ত্রিপল নেই। এখানেই গৌরেশ্বর নদীর জলে বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। নষ্ট হয়েছে চাষ, নষ্ট হয়েছে বসবাসের এলাকা। ভেঙে পড়েছে রাস্তা। আবার কী সেরকমই বিপদ, এমনই আশঙ্কার মুখে দাঁড়িয়ে সুন্দরবনের এই অঞ্চল।
সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ বা বসিরহাট শহরেও সোমবার ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। বইছে জোরালো বাতাস। রবিবার রাতে রেমালে আছড়ে পড়ার মতো বেগ না হলেও বিপদের গন্ধ স্পষ্ট। ফলে সোমবারও রাত জাগবে এই অঞ্চল।
Comments :0