টানা ৪২ দিন আন্দোলনের মুখে পিছাতে হলো জগনমোহন রেড্ডি সরকারকে। অন্ধ্র প্রদেশের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের ১১টি দাবির মধ্যে ১০টি মেনে নিতে হলো মুখ্যমন্ত্রীকে।
বেতন, কাজের শর্ত, কাজের পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত দাবিতে টানা লড়াই চালিয়েছে অন্ধ্রের অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। সংগঠনের সভাপতি জি রানি বলেছেন, ‘‘সরকারের আশ্বাসে আমরা আপাতত আন্দোলন তুলে নিচ্ছি। তবে প্রতিশ্রুতি মানা না হলে আন্দোলনে নামা হবে ফের।’’
আন্দোলনের ৪২ দিন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির সরকারের হাতে বারবার নিপীড়নের শিকার হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়িকারা। তবু রাস্তা থেকে সরেননি। আন্দোলনের পাশে থেকে সিআইটিইউ’র মতো শ্রমিক সংগঠন। রাজনৈতিক স্তরেও প্রভাব পড়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবিতে সরব হয় বামপন্থীদের পাশাপাশি বিরোধী বিভিন্ন দল। প্রদেশ কংগ্রেসের সদ্য নিযুক্ত সভাপতি ওয়াইএস শর্মিলা সরকারের মনোভাবে প্রতিবাদ জানান।
ভুখ হরতাল চালাচ্ছিলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা। এমন হাজারের বেশি আন্দোলকারীকে রাতের বেলা গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার তীব্র নিন্দা করে সিপিআই(এম) অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য কমিটি। রাস্তায় নেমে শামিল সিপিআই(এম) কর্মী ও নেতাদেরও টেনে হিঁচড়ে সরিয়েছিল পুলিশ।
মঙ্গলবার আলোচনায় ঠিক হয়েছে যে জুলাইয়ে নতুন বেতন বৃদ্ধি ঘোষণা করা হবে। তবে প্রতিশ্রুত হারে ঘোষণা করতে হবে নতুন বেতন। সহায়িকাদের নিয়োগে বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করতে রাজি হয়েছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকার। বয়স ৬২ হলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ১ লক্ষ টাকা এবং সহায়িকাদের এককালীন ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার দাবিও মানা হয়েছে। রাজ্যের ৫৫ হাজারের বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শৌচালয় সংস্কারে ৭.৮১ কোটি টাকা দিতেও সম্মত হয়েছেন জগনমোহন।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই প্রায় একই ধরনের দাবিতে লড়াই চালাচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশা’র মতো প্রকল্প কর্মীরা। প্রসূতি মহিলা এবং সদ্যোজাত শিশু ও মায়েদের পরিচর্যার দায়িত্বে থাকেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। আশা কর্মীরা জনস্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেন বাড়ি বাড়ি। অথচ তাঁদের কর্মীর মর্যাদা দিতেই নারাজ দেশের সরকার। জীবনধারনের ন্যূনতম অর্থ দেওয়া হয় না। কাজের সুরক্ষাও নেই। রাজ্য সরকারগুলিও অনেকক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে না।
Comments :0