কাকদ্বীপে দশম শ্রেণির ছাত্র’র মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অনীক দাসকে শুক্রবার গড়িয়া জুভেনাইল কোর্টে হাজির করা হলে তার জামিন বাতিল করে বিচারক ১২দিন হোমে রাখার নির্দেশ দেন। অনেক টালবাহানার পর বৃহস্পতিবার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ছেলে বলেই পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এসএফআই’র হুঁশিয়ারির চাপেই অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে অভিযুক্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার এসএফআই, ডিওয়াইএফআই কাকদ্বীপ আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে মিছিল ও পথ অবরোধ কর্মসুচি হয়।
কাকদ্বীপে দশম শ্রেণির ছাত্র’র মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় এসএফআই। বুধবার কাকদ্বীপে মৃত ছাত্র’র পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি প্রতীকঊর রহমান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এর শেষ দেখে ছাড়বো। মৃত ছাত্র’র শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াবে এসএফআই। প্রয়োজনে আইনি লড়াই হবে। রাস্তায় লড়াই হবে। অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
কাকদ্বীপের সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণির ছাত্র তৃণাঙ্কর ধল গত ১৬ জুলাই বাড়িতে আত্মঘাতী হয়। ঘরে সিলিং ফ্যানে গামছা গলায় ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাড়ি কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার স্টিমারঘাট এলাকায়।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মৃত ছাত্র’র পরিবারের অভিযোগ, অনেক টালবাহানার পর গত ২৭ জুলাই পুলিশ লিখিত অভিযোগ নেয়। পুলিশ কোন তদন্ত করেনি। ঘটনার প্রায় দেড় মাস হতে চললো অথচ পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেনি। একমাত্র সন্তান মেধাবী ছাত্র’র মৃত্যুর ঘটনায় দিনের পর দিন তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। মৃত ছাত্র’র শোকার্ত বাবা জয়ন্ত কুমার ধল ও মা মৌমিতা ধল’র অভিযোগ, তৃণাঙ্কুরকে স্কুলে যাতায়াতের পথে বিভিন্নভাবে হুমকি, ভীতি প্রদর্শন এমনকি তাঁর সহপাঠীদের সামনে টিউশন পড়তে গেলে অভিযুক্ত অনীক দাস ভয় দেখিয়ে তার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করাতে বাধ্য করে। ওই ঘটনার ভিডিও করা হয়। ওই ভিডিও মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ও ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে দেয় সে। তৃণাঙ্কুরকে স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর উপর মানসিক অত্যাচার করায় সে ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরা পুলিশ নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন।
এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। জানা গেছে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করতে সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কাকদ্বীপের এসডিপিও’র নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করেন। বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত অনীক দাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
Comments :0