GAZA FAMINE CHILD DEATH

দুর্ভিক্ষের কবলে গাজা, শিশুরা ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে

আন্তর্জাতিক

গাজার জায়গায় জায়গায় মর্মান্তিক দৃশ্য এমনই। তীব্র গরমে শিশুরা বসে আছে খাবারের আশায়।

কেবল একটি হাসপাতালে সাত দিনে মৃত্যু হয়েছে চার শিশুর। অপুষ্টিতে ভুগছিল সকলে। অপুষ্টিতে গুরুতর অসুস্থ আরও প্রায় আড়াইশো শিশুর চিকিৎসা কোনোমতে চলছে গাজার এই কামাল আদওয়ান হাসপাতালে। 
মে-তেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানিয়েছিল গাজায় পুরোদমে দুর্ভিক্ষ চলছে। জুনে অবস্থা ভয়ঙ্কর। উত্তর গাজার বিভিন্ন অংশে হাজার হাজার বাবা-মা সন্তানদের নিয়ে খাবারের খোঁজে বের হচ্ছেন। অন্তত শিশুদের কোনোরকমে বাঁচিয়ে রাখার মতে রসদটুকু জোগার করতে নাজেহাল হতে হচ্ছে।
ইজরায়েলের সেনা লাগাতার আন্তর্জাতিক খাদ্য সহায়তায় বাধা দিয়ে চলেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্বেগ জানালেও গাজার মাটিতে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। হাসপাতাল ধ্বংস করা হয়েছে একের পর এক। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মাথার ওপর ছাদ। শরণার্থী শিবিরে বেছে বেছে চলছে হামলা। ত্রাণকেন্দ্রেও বোমা ফেলতে ছাড়ছে না ইজরায়েলের সেনা। 
রবিবারই প্যালেস্তাইনের উদ্বাস্তু বিষয়ক রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিভাগ ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন ঘর হারানো বাসিন্দারা। এমন ৬৯ শতাংশ স্কুল গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েলের বাহিনী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ভেঙে লাগাতার এই হামলা বন্ধ হোক।  
ওয়েবসাইট প্যালেস্তিনিয়ান ইনফরমেশন সেন্টারকে গাজার বাসিন্দা সইদ আসলেম বলেছেন, ‘‘ভোর থাকতে থাকতে থাকতে খাবারের খোঁজে বের হচ্ছি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি, যদি কোনও ত্রাণকেন্দ্র থেকে কিছু পাওয়া যায়।’’ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি থেকে ছোট ছেলেমেয়েরা বেরচ্ছে জলের খোঁজে। দূরে কোথাও জল আনার জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়াতে হচ্ছে। সবাই তো জল আর খাবারের খোঁজ করছে হন্যে হয়ে।’’ 
গাজার উত্তরে জাবালিয়ায় ত্রাণ শিবিরও ছাড়েনি ইজরায়েলের বাহিনী। তার পর থেকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুরে যাচ্ছে কোনো ত্রাণ ঢুকছে না। কখনও বা মিলছে অতি সামান্য খাবার। 
উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের ডিরেক্টর হোসাম আবু সাফিয়া সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন ক্ষুধার্ত, অপুষ্ট শিশুদের কথা।  তিনি বলেছেন, ‘‘একেবারে ছোট শিশুদের বিভাগে প্রতিদিন মৃত্যু দেখতে হচ্ছে, তার কারণ অপুষ্টি। এক সপ্তাহেই চার শিশু অপুষ্টিতে মারা গিয়েছে কেবল আমাদের হাসপাতালে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘গাজার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে গিয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য কর্মীরা যতটুকু পারছি সহায়তা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তর থেকে উত্তর গাজায় ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা দরকার দ্রুত।’’

Comments :0

Login to leave a comment