আট বছর ধরে বন্ধ হিন্দমোটরের হিন্দুস্থান মোটরস কারখানা। সেই কারখানার অব্যবহৃত ৩৯৫ একর জমি হাতে নেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের ভূমি দপ্তরের। মঙ্গলবার সেই জমির অবস্থান নির্ণয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিল হুগলি জেলা প্রশাসন। জেলা শাসক ও ভূমি দপ্তরের আধিকারিকরা যাবেন হিন্দমোটরে, তাই তৈরি ছিল পুলিশও। হঠাৎই জেলা প্রশাসন আজকের এই কর্মসূচি বাতিল করে। জেলা শাসক পি দীপা প্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় কিছু সমস্যা আছে। তাই আজ ‘ফিজিক্যাল পজেশন’ নেওয়ার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। পরে আলোচনা করে দিন ঠিক করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জমি চিহ্নিত করা হয়ে গেছে। সেই জমিতে সরকারি বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হবে। প্রায় সাতশ একরের বেশি জমি রয়েছে হিন্দুস্থান মোটরের। তার মধ্যে তিনশ একর বেঙ্গল শ্রীরামকে দেওয়া হয়েছে আবাসনের জন্য। কিছু জমিতে টিটগড় ওয়াগন, যে সংস্থায় রেলের কোচ তৈরি হয়, তাদের কারখানা রয়েছে।
১৯৪৮ সালে উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্থান মোটরসের অ্যাম্বাসাডর তৈরির কারখানা পথচলা শুরু করে। ২০১৪ সালে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝোলে। কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় প্রায় ২৩০০ শ্রমিক ছিল কারখানায়। অনেক আন্দোলন, শ্রমিক প্রতিবাদেও কারখানার গেট খোলেনি। হিন্দুস্থান মোটরের অব্যাহত জমিতে জঙ্গলে ভরে যায়। অবশেষে সরকার সেই জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায় দু’মাস শুনানির পর অবশেষে জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন হতে দেখে শ্রমিক মহল্লায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। অনেকেই বলেন, আর কি হবে সব তো শেষ। অনেকে অবশ্য আশাবাসী সরকার যদি এই জমিতে কিছু করে তাঁদের জন্য। কারখানার জমিতে কারখানার দাবি সিটুর।
সিআইটিইউ নেতৃত্ব মনীন্দ্র চক্রবর্তী বললেন, সরকার জানে না যে আদালত রায় দিয়েছিল হিন্দমোটরের জমি আর যন্ত্রাংশ বিক্রির বিপক্ষে। যতদূর জানি, এই অব্যবহৃত জমি শ্রীরাম গোষ্ঠী যেমন চাইছে, তার পাশাপাশি টিটাগড় ওয়াগনও চাইছে। সরকার অধিগ্রহণের কথা বলছে। কারখানা হলে শুধু কিছু শ্রমিকের কাজ হবে তা তো নয়, অর্থনীতির পক্ষেও ভাল হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সিআইটিইউশিল্পের জমিতে শিল্প চাইছে।’’
Comments :0