বইকথা
টুকরো রোদের রুমাল : আলোকিত আকাশের সুস্নাত ঘ্রাণ
সৌরভ দত্ত
নতুনপাতা
একটি ছড়া হল দুটি শব্দের মধ্যে ধ্বনির পুনরাবৃত্তি, ছড়ার রাজ্যে পৃথিবী পদ্যময় ঝঙ্কারে ঝঙ্কারিত হয়।পল্লী বাংলার লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন দিক উঠে আসে ছড়ায়-ছড়ায়। ঘুমপাড়ানি ছড়াগুলো শিশুদের ঘুমানোর মাধ্যম ছিল একসময়। শিশুকিশোরদের আকর্ষণের অন্যতম সাহিত্য মাধ্যম ছড়া।ছড়ার ছন্দে মাতোয়ারা কবি-ছড়াকার নতুন স্বপ্নে মাতেন। প্রখ্যাত ছড়াকার অপূর্ব কুণ্ডুর একটি অনিন্দ্যসুন্দর ছড়ার বই–‘টুকরো রোদের রুমাল।’যার মধ্যে নিহিত আছে এক বিশেষ দ্যোতনা।এক একটি ছড়ার স্পন্দন যেন পাঠককে প্রকৃতির সাথে ভাব পাতায়। বইয়ের প্রথম ছড়া–‘রোদের রুমাল’ যেখানে কবির ভাবনায় প্রতিভাত হয়েছে–“দিনের শেষে আকাশ যখন টুকরো রোদের রুমালটাকে,/নদীর জলে নিচ্ছে ধুয়ে বন-শিরিষের গাছের ফাঁকে।”পরবর্তী ছড়ায় আকাশ সম্পর্কে ব্যক্ত হয়েছে কবির অনুভব–“তোমার আকাশে রামধনু ওঠে না তো/নেই জানি কোন পাখিদের ওড়াউড়ি।”‘সঙ্গে নিও’ ছড়ার শেষাংশে কবি বলেছেন–“বুনো-ফুলের গন্ধ কিংবা মেঠো পথের ধুলো/তার সাথে নাও ছড়িয়ে পড়া খুশির স্বপ্নগুলো!”‘নীলকমল লালকমল’ ছড়ায় ছড়াকার দেখিয়েছে নীলকমল লালকমল কিভাবে ধুলি ধূসরিত –“রূপকথা নয় আজ।/নীলকমল আর লাল কমলের রাজকুমারের সাজ,/নেই তো এখন,এখন তারা পথের ধুলোয় থাকে।”‘এক মুঠো খুশি’ ছড়ায় কবি বলেছেন–“কি দারুণ মজা হবে ভাবি শুধু তাই/কিচ্ছু না, একমুঠো খুশি যদি পাই।”‘ও পক্ষীরাজ’ কবিতায় ছড়াকারের ভাবনায় ফুটে ওঠে–“আমরা তো রাজপুত্তুর নি,ডাকছি তবু তোকে/রূপকাহিনীর ছবি এখন ঝাপসা দুই চোখে।”‘মা’ নামাঙ্কিত ছড়াটিতে ছন্দবদ্ধ হয়েছে–“সন্ধেবেলায় ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি ডাকে/চোখের পাতায় আলতো ছোঁয়ায় স্বপ্ন দিতে এঁকে।‘মুঠোয় পাবো’ ছড়ায় জেগে থাকে নদী কাহিনি –“এই আমাদের একটা নদী দু’জন থাকি দু’ধার,/আয় না এখন কাগজ দিয়ে নৌকো শুধু গ’ড়ি।” বইয়ের প্রতিটি ছড়াই ভিন্ন স্বাদের। পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ।ছড়ার উপাদান হিসেবে উঠৈ এসেছে বাংলার নদী,মাঠ,ঘাট, গাছপালা, সূর্য, আকাশ,পাখি রূপকথার অনন্য আখ্যান।
গ্রন্থনাম–টুকরো রোদের রুমাল
লেখক–অপূর্ব কুণ্ডু
প্রচ্ছদের ছবি–চু সিনচিয়ান , চীন
প্রকাশক–প্রোরেনাটা
Comments :0