ভাস্কর দাশগুপ্ত: পুরুলিয়া
তৃণমূল এবং বিজেপি বুঝে গেছে যে তাদের হাল ভালো নয়। তাদের লুট সন্ত্রাস বন্ধ করার এটাই উপযুক্ত সময়। শনিবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে এবং কাশীপুরে দু’টি নির্বাচনী সভায় ভাষণ দিয়ে একথা বলেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি’র লুট সন্ত্রাসের রাজত্ব বন্ধ করতে এটাই সময় মানুষের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার। লুটে খাওয়াদের বিরুদ্ধে খেটে খাওয়া মানুষের লড়াই এখন। এই নির্বাচনে বিজেপি’কে কেন্দ্র থেকে হটাতে পারলেই রাজ্য থেকে তৃণমূলের অপসারণ শুরু হয়ে যাবে।
রঘুনাথপুর জনসভায় সেলিম বলেছেন, দেশের সংবিধানকেই মানতে চাইছে না কেন্দ্রের শাসক দল। তারা চাইছে দেশকে বেলাইন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে। ওদের কেন্দ্র থেকে হটাতে পারলেই এরাজ্যে তৃণমূলকে হটানো সম্ভব হবে। আরএসএস’র মদতে কংগ্রেসকে ভেঙে তৃণমূল তৈরি করা হয়েছিল বাংলার বাম আন্দোলনকে দুর্বল করতে। সেই তৃণমূল এরাজ্যে বিজেপি’কে হাত ধরে এনেছে। তারপরে সংসদে বামপন্থীদের শক্তি কমেছে বলেই এনআরসি, সিএএ’র বিপদ নিয়ে আসা হয়েছে। বিজেপি সারা দেশ জুড়ে ভাষা ধর্মের নামে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করছে, আর এরাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি’র মধ্যে নকল যুদ্ধ প্রচার করা হচ্ছে। মোদী ক্ষমতায় বসার পরে মানুষের রোজগার ধ্বংস হয়েছে, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। আর এরাজ্যে মানুষকে পাঁচশো বা হাজার টাকা দেওয়ার নাম করে মানুষের সম্পদ লুট করে টাকা তুলছে তৃণমূল, আসল ভাণ্ডার সেইখানে। সেই ভাণ্ডার জমা হয়েছে পার্থ, অনুব্রত, জ্যোতিপ্রিয়দের কাছে, তার ভাগ পৌঁছচ্ছে কালীঘাটে।
তিনি বলেন, এই কারণেই আমরাই বলেছিলাম, চোর ধরো জেল ভরো। রাজ্যের পুলিশ চোর না ধরে চোরেদের পাহারা দিয়েছে। আর চোরেরা দল বদলে বিজেপি’তে চলে গেলে কেন্দ্রের পুলিশ তাদের পাহারা দিয়েছে। তৃণমূল আর বিজেপি’র সমঝোতায় মানুষ ন্যায়বিচার পায়নি, হক আদায় হয়নি এখনও। সব সেটিং ভেঙে এবার হক আদায়ের লড়াই শুরু হয়েছে।
শনিবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তের সমর্থনে এবং কাশীপুরে পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতোর সমর্থনে সভা দু’টিতে ভাষণ দেন সেলিম। রঘুনাথপুরে এটিএম গ্রাউন্ডের জনসভায় সেলিম ছাড়াও ভাষণ দেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র, রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত, পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম, আরএসপি’র জেলা সম্পাদক অত্রি চৌধুরি প্রমুখ। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিমলেন্দু কোনার। কাশীপুরের সভায় মহম্মদ সেলিম এবং অমিয় পাত্র ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসের প্রার্থী নেপাল মাহাতো। সভাপতিত্ব করেন কাশীনাথ ব্যানার্জি।
Comments :0