২০২২-২৩ সালে ৫ কোটিরও বেশি নথিভুক্ত গ্রামীণ গরিব মানুষের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে একশ’ দিন কাজের প্রকল্প থেকে। রাজ্য সরকারগুলিই এই কাজ করেছে। আগের বছরের তুলনায় এবারে কর্মপ্রার্থীদের নাম বাদ পড়ার হার ২৪৭ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার লোকসভায় এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তিনি জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ সংখ্যক নাম বাদ পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ফলে এই তালিকার সবচেয়ে ওপরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।
লোকসভায় পেশ করা কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, রেগা কর্মপ্রার্থীদের নাম সবচেয়ে বেশি ছাঁটা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ২০২২-২৩ সালে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ৮৩ লক্ষ ৩৬ হাজার নথিভুক্ত গরিবের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে চাইলেও তাঁরা আর একশ’ দিনের কাজ পাবেন না।
লোকসভায় কংগ্রেসের দুই সাংসদ ভিকে শ্রীকান্দন এবং গৌরব গগৈ কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘শোনা যাচ্ছে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প (এমজিএনআরইজিএস) থেকে সারা দেশে ১ কোটিরও বেশি মানুষের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। এটি কি সত্যি? যদি সত্যি হয়, তাহলে এত নাম বাদ পড়ল কেন?’’
লিখিত জবাবে গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘২০২২-২৩ আর্থিক বছরে এমজিএনআরইজিএস কর্মপ্রার্থীদের তালিকা থেকে মোট ৫ কোটি ১৮ লক্ষ নথিভুক্ত মানুষের নাম বাদ দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার। আগের আর্থিক বছরের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ২৪৭ শতাংশ।’’
মন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘ভুয়ো জব কার্ড, ডুপ্লিকেট জব কার্ড, বর্তমানে কাজ করতে ইচ্ছুক নন, কর্মপ্রার্থীর পরিবারের অন্য গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্থায়ীভাবে চলে গিয়েছেন অথবা কর্মপ্রার্থীর মৃত্যুর মতো নানান কারণে নাম বাদ পড়েছে।’’
তবে পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন, একশ’ দিন প্রকল্পে কর্মপ্রার্থীর জব কার্ড এবং আধার কার্ডে তথ্যগত অমিল থাকার কারণেই সবচেয়ে বেশি নাম বাদ পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার জব কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযোগ বা লিঙ্ক বাধ্যতামূলক করার পরেই অসংখ্য রেগা শ্রমিক সমস্যায় পড়েছেন। অভিযোগ, রাজ্য সরকারগুলি উদ্যোগ নিয়ে রেগা শ্রমিকের দুই কার্ডের মধ্যে তথ্যগত পার্থক্য ঘোচানোর বদলে তড়িঘড়ি তাঁদের নামই বাদ দিয়ে দিয়েছে!
দুই কার্ডের মধ্যেকার ভুল সংশোধনের বদলে এভাবে বিপুল সংখ্যক গরিব কর্মপ্রার্থীর নাম বাদ দেওয়ায় অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জবাব, ‘‘বিষয়টি রাজ্য সরকারগুলির এক্তিয়ারে পড়ে।’’
Comments :0