CITU COUNCIL MEET HAWKER

হকার উচ্ছেদ রোখার সংগ্রাম নির্দিষ্ট করবে সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সভাও

রাজ্য

সিআইটিইউ সর্বভারতীয় ৫০ তম কাউন্সিল সভার লোগো প্রকাশ করছেন নেতৃবৃন্দ।

রাজ্যে হকার উচ্ছেদ বেআইনি। ২০১৪’র আইন অনুযায়ী হকার উচ্ছেদ করা যায় না। হকার উচ্ছেদ নিয়ে নাগরিক কনভেনশন ডাকবে সিআইটিইউ। এই উচ্ছেদ রোখা হবে। কলকাতায় সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় ৫০-তম কাউন্সিল সভাতেও হকার উচ্ছেদ রুখতে কর্মসূচি নির্দিষ্ট করা হবে।
শুক্রবার কলকাতায় শ্রমিক ভবনে এ কথা বলেছেন সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ। ৯ থেকে ১১ আগস্ট কলকাতায় সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় কাউন্সিল সভা। সারা দেশের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আসবেন সভায়। এদিন শ্রমিক ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি সুভাষ মুখার্জি, সম্পাদক অনাদি সাহু সহ নেতৃবৃন্দ। সর্বভারতীয় কাউন্সিল সভার বিশেষ লোগো প্রকাশ করেছেন সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ। কাউন্সিল সভা উপলক্ষে শ্রমিক সমাবেশ হবে কলকাতায় ৯ আগস্ট। আর রাজ্য জুড়ে চলবে আলোচনা সভা। 
হকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ১১ জুলাই ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি থেকে কলকাতা কর্পোরেশনে মিছিল করে যাবে হকার যৌথ মঞ্চ। সিআইটিইউ সহ একাধিক কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন অনুমোদিত হকার সংগঠন অংশ নেবে এই সমাবেশে। কর্পোরেশনের মেয়র তথা পৌরমন্ত্রীকে ডেপুটেশন দেওয়া হবে। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। 
হকার যৌথ মঞ্চের সঞ্চালক অসিতাঙ্গ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, ২০১৪’র কেন্দ্রীয় হকার আইন রাজ্য সরকার মানছে না। কেন্দ্রীয় হকার আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ করা যায় না। টাউন ভেন্ডিং কমিটি সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করবে। এই তালিকা না হলে কোনও হকারকে উচ্ছেদ করা যায় না। কাউকে অন্য জায়গায় সরাতে হলে অন্তত ১ মাস আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। প্রত্যেক হকারের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্যের সরকার আসলে ২০১৪’র আইনকে মানে না।  
সুভাষ মুখার্জি বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রেল হকার উচ্ছেদ করছেন। আর মমতা ব্যানার্জি উচ্ছেদ করছেন রাস্তায় বসা হকারদের। এরা মানুষকে ভাত দিতে পারছে না, কাজ দিতে পারছে না। আবার হকার তুলে দিচ্ছে।’’
সিআইটিইউ ৫০ তম কাউন্সিল সভায় রাজ্যে ব্রিটানিয়া বন্ধ, হকার উচ্ছেদ, স্মার্ট মিটার নোটিফিকেশন নিয়েও আলোচনা হবে। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ব্রিটানিয়া বন্ধ হয়েছে সিআইটিইউ’র অজ্ঞাত সারে। হকার উচ্ছেদ মানি না। পরিকল্পনা ছাড়া হকার তোলা যাবে না। 
অনাদি সাহু বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বিক্রি হচ্ছে। নতুন শ্রম কোড আইন চালু করতে চাইছে কেন্দ্র। জিনিসের দাম বাড়ছে, কর চাপাচ্ছে তার ওপর। ওষুধের দাম বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার লোক নিয়োগ করছে না, রাজ্যে একই অবস্থা। চাকরির জন্য ঘুষ নিচ্ছে তৃণমূল। দেশে নিট, নেট দুর্নীতি ঘিরে অরাজকতা চলছে।’’ 
সাহু বলেন, ‘‘রাজ্যে কোনও শিল্প আসছে না। মোদী সরকারের আমলে রাজ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বন্ধ হয়েছে, রাজ্য মাদার ডেয়ারি বিক্রি করতে চাইছে। ছেলে মেয়েরা পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল বুলডোজার চালাচ্ছে, এটা মানা হবে না। কেন্দ্রীয় হকার আইন কার্যকরী করতে হবে। টাউন ভেন্ডিং কমিটি করেছে সিআইটিইউ-কে বাদ দিয়ে। চার বছর আগে বলেছিল হকারদের সব সমস্যা সরকার মিটিয়ে দেবে, কিন্তু হয়নি।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বেসরকারিকরণে শ্রমিক-কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বেন। স্মার্ট মিটারে আগে টাকা জমা দিতে হবে। এই নিয়ে আবার প্রতিবাদ হবে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ করা যাবে না। কলকাতায় বিদ্যুতের দাম সারা দেশে সব থেকে বেশি।’’
কাউন্সিল সভায় আলোচনা হবে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের কাজেরনিরাপত্তা, ন্যূনতম ২৬ হাজার টাকা মজুরি, আশা-অঙ্গনওয়াড়ি-মিড ডে মিল প্রকল্পের কর্মীদের সুরক্ষা। সমকাজে সমবেতন, সামাজিক সুরক্ষার লড়াই জোর দার করতেও।

Comments :0

Login to leave a comment