ছবি: অচ্যুৎ রায়
সারা বিশ্বে স্টিফেন হকিংকে চেনেন না এরকম মানুষ হয়তো আছেন। ৯০% শরীরিক প্রতিবন্ধকতাও কখনই তার পড়াশুনার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারেনি। শরীর কোনোও ভাবেই তার মস্তিস্ককে আটকাতে পারেনি। স্টিফেন হকিং অবশ্যই বহু মানুষের অনুপ্রেরণা। বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে পশ্চিমবঙ্গ প্রতিবন্ধী সম্মিলনীতে স্টিফেন হকিং স্মারক সম্মান পেলেন মহম্মদ আলম রহমান। ৯০ শতাংশ সেরিব্রাল পালসির শিকার মহম্মদ রহমান পা দিয়ে লেখেন। ওই ভাবেই পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন। ভবিষ্যতে আরও পড়াশুনো করতে চান রহমান। কে বলতে পারে একদিন এই ছেলেই হয়তো গবেষক, বিজ্ঞানী বা দার্শণিক হতে পারে। শিক্ষা জগতে এক উজ্জল নাম হতে পারে মহম্মদ আলম রহমান।
তবে শুধু মহম্মদ আলম রহমানই নয় ব্রজ কিশোর মন্ডল কানে শুনতে পান না কোনও শব্দ। মেশিনের সাহায্যে অত্যন্ত ক্ষীণ আওয়াজ পৌছায় তার কানে। এক্ষেত্রেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বুদ্ধিমত্তাকে হার মানাতে পারেনি। ডাক্তারী প্রবেশিকা পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তির্ণ হয়েছেন ব্রজ কিশোর। ভবিষ্যতে বড় চিকিৎসক হতে চান ব্রজ কিশোর। রিমো সাহা নিম্নাঙ্গ অস্থি প্রতিবন্ধী। হাটতে পারেন না। দিন দিন শরীরের নিম্নাঙ্গের নার্ভ শুকিয়ে যাচ্ছে। তাতে কি ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটলিনা চ্যানেল ও নর্থ চ্যানেল সাতরে পার করে ফেলেছেন কবেই। ভবিষ্যতে আরও বড় প্রতিযোগীতায় অংশ নেবেন তিনি।
শুধু রিমো, ব্রজ কিশোর বা মহম্মদ আলিই শুধু নয়, এই তালিকা দীর্ঘ। শনিবার ৩ ডিসেম্বর বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে রানি রাসমণি রোডে প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর অনুষ্ঠান হয়। সেখানে প্রতিবন্ধী ও বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের দাবি দাওয়া নিয়ে সরব হয় এই সংগঠন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধী অধিকার আইন-২০১৬ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত দপ্তরে কার্যকরী করার আহ্বান জানান হয় এই মঞ্চ থেকে। এছাড়াও তাদের দাবি সমস্ত প্রতিবন্ধীদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করতে হবে। আইন অণুযায়ী প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ আদালত গড়তে হবে। এছাড়াও আরও দাবি সরকারের সামনে রেখেছে তারা। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, অভিনেতা পরাণ বন্দোপাধ্যায় ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গাঙ্গুলী।
Comments :0