মধুসূদন চ্যাটার্জি
পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের বক্তব্য ছিল ‘‘আমাদের অঞ্চলে একটা গার্লস হাইস্কুল হবে না?’’ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিয়েই ২০০৯সালে বামফ্রন্ট সরকার ওন্দা থানার রতনপুর পঞ্চায়েতে বড়কুরপা গ্রামে একটি জুনিয়র হাইস্কুলের অনুমোদন দেয়। স্কুলটি শুরুও হয়। বড়কুরপা গ্রামের ছাত্রীরা এই স্কুলেই পড়াশোনা করত। গত দু’ বছর স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। কারণ একটিই— শিক্ষক, শিক্ষিকার ব্যবস্থা না করা।
শুনশান এলাকায় নীরবে দাঁড়িয়ে আছে শিক্ষার পরিকাঠামোটি। গ্রামের বাসিন্দা ফুলচাঁদ বাউরি, তরুণ লোহাররা জানান,‘‘আমাদের গ্রামের মেয়েরা এই স্কুলে পড়ত। একটা ভরসা ছিল আমাদের। বামফ্রন্ট সরকার আমাদের আবদারের মর্যাদা দিয়েছিল। এই সরকার সেটা তুলে দিল।’’ এখান থেকে পাশ করে কলেজে পড়াশোনা করা ছাত্রী সুমিত্রা লোহার, স্নেহা লোহাররা জানান,‘‘স্কুলে খুবই ভাল পড়াশোনা হত।’’ তিনজন শিক্ষক ছিলেন। ঘটনা হল কোনো স্থায়ী শিক্ষক এখানে নিয়োগ হয়নি। বাইরে থেকে অতিথি শিক্ষক নিয়ে এসে পড়ানো হত। কোভিড মহামারীর সময় এই বড়কুড়পা জুনিয়ার হাইস্কুলে ৩২জন ছাত্রী ছিল। কোভিড পর্ব উঠে যাওয়ার পরই স্কুল বন্ধ হয়ে গেল। যাঁরা শিক্ষক ছিলেন তাঁরা অবসর নেওয়ার পর এই স্কুলের দিকে আর নজর দেওয়া হল না। তালা পড়ে গেল স্কুলে। রতনপুর অঞ্চলের মধ্যে এটিই ছিল একমাত্র গার্লস হাইস্কুল। রতনপুর এলাকার শিক্ষক দেবব্রত চক্রবর্তী জানান,‘‘এখন বড়কুড়পা গ্রামের ছাত্রীরা ছোট কুড়পা হাইস্কুলে পড়াশোনা করতে যায়। কবে এই চালু করা হবে তা কেউ জানেন না।’’ বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, কিছুই বলা যাবেনা। সবটাই ওপর থেকে হয়। গ্রামের মানুষের বক্তব্য একটা সময় এই বিদ্যালয়ের ঘরগুলোও নষ্ট হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে বিদ্যালয়ের স্মৃতি। নীরব, নির্বাক সরকার।
ছবি: ওন্দা থানার রতনপুর অঞ্চলের একমাত্র গার্লস হাইস্কুল বড়কুড়পা জুনিয়ার হাইস্কুল শিক্ষকের অভাবে বন্ধ।
Comments :0