মোট ভোটদাতা কত, ঠিক কতজন ভোট দিয়েছেন। চার দফা নির্বাচনের পর শতাংশের হিসেব দিলেও সেই সংখ্যা কিছুতেই প্রকাশ করছে না নির্বাচন কমিশন। ভোটদাতার সংখ্যার খোঁজে এবার সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হলো আবেদন।
অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস আবেদন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার এই মামলায় নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীকে প্রশ্নও করেছে শীর্ষ আদালত। সামান্য সংখ্যার জন্য আইনজীবী বিচারপতিদের কাছে সময় চেয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের থেকে জেনে এসে জানাবেন বলে!
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বারবারই বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ছে। তার একটি কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বিজেপি’র নির্বানী সভা থেকে ভাঙছেন আদর্শ আচরণ বিধি। নির্দিষ্ট ধর্মকে সামনে রেখে চালাচ্ছেন প্রচার। তাঁর দেখাদেখি বিজেপি’র সব স্তরের নেতানেত্রীরা ধর্মীয় বিদ্বেষে মদত দিচ্ছেন ভাষণে। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি নির্বাচন কমিশনে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে অভিযোগ জানালেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কমিশনের ভূমিকায় দ্বিতীয় অসঙ্গতি ধরা পড়ে ভোটের পর্বে। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট হয়। ২৬ এপ্রিল হয় দ্বিতীয় দফার ভোট। এই দু’দফায় ভোট দানের চূড়ান্ত হার কমিশন জানয়েছিল ১ মে। প্রথম দফা ভোটের এগারো দিন পর কেন চূড়ান্ত হার জানাতে হলো তার ব্যাখ্যা কমিশন দেয়নি।
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু বলেছেন, ‘‘চূড়ান্ত হিসেবে ভোটদানের হার ৬ শতাংশ বেড়ে যাওয়াও আশ্চর্যজনক। এই অসঙ্গতির বিষয়েও নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যাখ্যা উপস্থিত করেনি। বিধানসভা-ভিত্তিক এবং সংসদীয় কেন্দ্র-ভিত্তিক ভোটের চূড়ান্ত সংখ্যা জানানো হয়নি।’’
গত ১০ মে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের দলগুলির প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনে দেখা করেন। সেখানেই মোট ভোটের সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়। কমিশন নিজে প্রকাশ করার দায়িত্ব না নিয়ে প্রতিনিধিদের বলে প্রিজাইডিং অফিসারের দেওয়া ফর্ম ১৭সি-তে বুথভিত্তিক চূড়ান্ত তথ্য রয়েছে। তা একত্রিত করে মোট সংখ্যা পাওয়া সম্ভব।
কিন্তু ভোটদানের সংখ্যা না দিয়ে কেবল হার দিলে সমস্যা হতে পারে গণনার সময়। বাড়তি কিছু ভোট কারও পক্ষে যোগ করে জিতিয়ে দেওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির একত্রিত তথ্যে অসঙ্গতি থাকলে কমিশন কোন সংখ্যাকে ঠিক মনে করবে তা নিয়েও কোনও স্বচ্ছতা নেই। সে সম্পর্কে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের দলগুলিকে চিঠিও দেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কমিশন আসল তথ্য না দিয়ে উলটে খাড়গেকে পালটা চিঠি দিয়ে আপত্তি জানায় সংশয় প্রকাশের জন্য।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে ভোট দানের তথ্য চেয়ে আবেদন জানান আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীর কাছে বক্তব্য জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
SC Voter Turnout
ভোট পড়ল কত? সংখ্যা চেয়ে মামলা সুপ্রিম কোর্টে
×
Comments :0