ISRAEL PALESTINE CONFLICT

রক্তস্নাত গাজার নুসেইরত ত্রাণ শিবির, ধিক্কার জানাল ইউরোপও

আন্তর্জাতিক

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news নুসেইরত শিবিরে হামলায় আহত শিশুকে নিয়ে এক পিতা।

৪ জন পণবন্দীকে মুক্ত করতে ২৭৪ জন প্যালেস্তিনীয়কে হত্যা করল ইজরায়েলী সেনা। শনিবার  সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে কমকরে ৬৯৮জন আহত হয়েছেন। 

৪ জনকে মুক্ত করতে হত্যা করা হয়েছে ২৭৪ জনকে। গড় হিসেবে, একজন ইজরায়েলী পণবন্দীর জীবনের মূল্য ৬৮.৫ জন প্যালেস্তিনীয়ের সমান। অর্ধমৃত অবস্থায় হাসপাতাল কিংবা মধ্য গাজার নুসেইরত ত্রাণ শিবিরের আশে পাশে ছড়িয়ে থাকা শিশু, মহিলা সহ নানা বয়সের মানুষের সংখ্যা যোগ করলে কি দাঁড়াবে সহজেই অনুমাণ করা যায়। 

কার্যত ঔপনিবেশিক সময়ের ‘কালেক্টিভ পানিশমেন্ট’ বা সমষ্টিগত শাস্তির নজির গাজায় ফিরিয়ে এনেছে ইজরায়েল। যেমন কয়েকজন ভারতীয় আন্দোলনকারীর প্রতিস্পর্ধার খেসারত দিতে হয়েছিল জালিয়ানওয়ালা বাগের ৩৭৯টি প্রাণকে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এবং নুসেইরত ত্রাণ শিবির থেকে আসা একের পর এক ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে, মৃত এবং আহতের স্রোত এসে ঢুকছে আল আকসা মার্টিয়ার্স হাসপাতালে। গোটা অঞ্চলের একমাত্র অবশিষ্ট হাসপাতাল হওয়ার ফলে এই হাসপাতালে সাহায্যের জন্য ছুটে আসছেন অসহায় মানুষ। কেউ কোলে করে নিয়ে আসছেন নিথর বোনের দেহ, আবার কেউ প্রাণপণে চেষ্টা করছেন কোলের শিশুকে অপারেশন টেবিল অবধি নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু জাগিয়ে রাখার। 

আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার সকালেও নুসেইরতে বিমান হানা চালিয়েছে ইজরায়েল। বিমান হানার ফলে তৈরি হওয়া ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও বহু মানুষের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। 

নুসেইরত হামলায় সরাসরি আমেরিকা যুক্ত রয়েছে বলেও দাবি উঠছে। প্যালেস্তিনীয় সংগঠনগুলির দাবি, আমেরিকার সামরিক স্যাটেলাইট ব্যবহার করে হামলার সময় এবং স্থান নির্বাচন করেছে ইজরায়েলী সেনা। প্যালেস্তিনীয় অথরিটির প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ মুস্তফা জানিয়েছেন, ‘‘নুসেইরত হামলার প্রতিবাদে রাষ্ট্রসংঘে আপৎকালীন অধিবেশনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় আমেরিকার যোগ প্রমাণ করে ওয়াশিংটন ডিসি সক্রিয় ভাবে গণহত্যায় সামিল রয়েছে।’’

আমেরিকা সহ ইজরায়েলের পশ্চিমী মিত্র দেশগুলি নুসেইরত গণহত্যাকে এড়িয়ে গিয়ে ৪ জন পণবন্দীকে জীবীত উদ্ধার করতে পারার বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় আমেরিকা ছাড়াও ফ্রান্স, ইউকে’র মত দেশগুলি রয়েছে। যদিও কিছুটা বেসুরে গেয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক সচিব জোসেফ বোরেল। তিনি বলেছেন, ‘‘রক্তস্নান অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। গাজা থেকে আরেকটি গণহত্যার খবর সামনে আসছে। তীব্র ভাবে এর নিন্দা করছি।’’

নরওয়ে’র সহকারী বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস মোৎসফেল্ডট ক্রাভিক বলেছেন, ‘‘গাজার নাগরিকদের গণহত্যা আমাদের স্তম্ভিত করে দিয়েছে। আমাদের দেশ এই হিংসার নিন্দা নিন্দা জানায়।’’

এর পাশাপাশি ইরান, তুরস্ক, জর্ডান, মিশরের মত দেশগুলির তরফেও নুসেইরত গণহত্যার কড়া নিন্দা করা হয়েছে।

 

 

Comments :0

Login to leave a comment