একসময় মালদহে সরকারি ও বেসরকারি পরিবহণ চলত শহর থেকেই। শহরে রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের নিজস্ব ডিপো থেকে চলত এই সব বাস। যেখানে নিগমের নিজস্ব অফিস, টিকিট কাউন্টার, কর্মী ও যাত্রীদের বিশ্রামাগার ছিল। ছিল কর্মী ও যাত্রীদের শৌচাগার ও বিশ্রামাগার।
আবার এর ঠিক পিছনেই ছিল অতুল মার্কেট বাসস্ট্যান্ড। যেখানে সবরকম সুবিধা সহ জেলার সমস্ত বেসরকারি বাস চলাচল করত। তবে এর একটা সমস্যাও ছিল। শহরের মধ্য দিয়ে শয়ে শয়ে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচলের কারণে শহরে যানজটের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে রাজ্যের এই দুই ডিপো শহরের উপকন্ঠে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তা কার্যকর করা যায়নি বামফ্রন্ট সরকারের মেয়াদে।
২০১১-তে রাজ্যের সরকারে তৃণমূল আসীন হওয়ার পর দুই বাসস্ট্যান্ড শহর থেকে কিছু দূরে রবীন্দ্র ভবনের কাছে সরিয়ে নেওয়া হয়। যা গৌড়কন্যা বাসস্ট্যান্ড হিসেবে পরিচিত। এখান থেকে প্রতিদিন মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও দুই দিনাজপুরের মধ্যে প্রায় তিনশো বাস চলাচল করে। তবে গৌড়কন্যায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি।
বিশেষ করে রাতে যাঁরা যাতায়াত করেন বা রাতে নিগমের যে কর্মীদের ডিউটি শেষ হয় তাঁরা সমস্যায় পড়েন। কেননা বাসে টিকিট বিক্রি অর্থ এবং অবিক্রিত টিকিট জমা দেওয়ার কোন অফিস নেই। যত রাতই হোক, আসতে হয় শহরের মুখ্য অফিসে। গৌড়কন্যা থেকে টোটো ধরে শহরের মুখ্য অফিসে রাতে টাকা নিয়ে আসার সময় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন কর্মীরা। শুধু আশঙ্কা নয়, বাস্তবেও অনেকের টাকা খোয়া গিয়েছে। পরিবহণ কর্মীদেরই মেটাতে হয়েছে।
রয়েছে পানীয় জল, বিশ্রামাগার সহ অন্যান্য সমস্যাও। কর্মদের অভিযোগ, এই সব সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয় রাজ্য ও নিগম।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের একটি ফলক নজরে এসেছে। ফলকে লেখা হয়েছে যে প্রায় এক বছর আগে ২০২৪’র ৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই গৌড়কন্যা বাসস্ট্যান্ডে কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। ফলকে উল্লেখ করা হয়েছে বাসস্ট্যান্ডের সীমানা প্রাচীর, ভূগর্ভস্থ জলাধার, প্রবেশ পথের মেরামতি ও বাসস্ট্যান্ডের সৌন্দর্যায়নের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশ্ন উঠেছে যেখানে যাত্রী বা কর্মীদের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল নেই সেখানে ভূগর্ভস্থ জলাধার আছে তো? নাকি সবটাই নাটক। একই ভাবে সীমানা প্রাচীর ও প্রবেশ পথ মেরামত বা স্ট্যান্ডের সৌন্দর্যায়নের উল্লেখ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে যে বাস্তবে কাজ কী হয়েছে।
অভিযোগ, পরিবহণ শ্রমিকদের জন্য গড়ে ওঠেনি বিশ্রামাগার, বাথরুম, টিকিট কাউন্টার, শ্রমিক সংগঠনগুলির ইউনিয়ন অফিস। জেলা সমহর্তা এবং পরিবহণ দপ্তরে জানানো হলেও কাজ হয়নি। ডব্লিউবিআরটিডব্লিউএফ’র মালদহ জেলা সভাপতি নুরুল ইসলামের দাবি, ফলক লাগালে হবে না। বাস্তবে রূপ দিতে হবে প্রতিশ্রুতির।
MALDAHA GOURKANYA BUS DEPOT
বাস ডিপোয় নেই পরিকাঠামো, সরকারি ফলকের অসত্য দাবিতে ক্ষোভ মালদহে
×
Comments :0