আচার্য সদনের গেট আটকে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ। সামনে ব্যারিকেড করা। একদিকে পুলিশ। অন্যদিকে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারিরা। পুলিশের ব্যারিকেডের সমানে বসে আছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাদের মধ্যে থেকে নদীয়ার মৌমিতা সরকার বলেন, ‘‘কেন আজ আমাদের এই দিন দেখতে হবে। আগে তো কখনও এই দুর্নীতি হয়নি। আসল অযোগ্য হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী। যারা দুর্নীতি করলো তাদের তো কাজ যাচ্ছে না। আমাদের কেন কাজ যাবে। কেন সরকার তালিকা প্রকাশ করছে না?’’
তিনি যখন এই কথা গুলো বলছেন তখন তার পাশে বসে থাকা সবার মুখে একটাই কথা, ‘দুর্নীতি করেছে এসএসসি, সরকার দায় ওদের আমাদের নয়।’
সুমন দাস। ২০১৬ এসএসসি প্যানেলে নাম ছিল তার। মুর্শিদাবাদের এই যুবক কখনও ভাবেনি তাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। গলায় থাকা সাদা কাপড় দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে তিনি বলেন, ‘‘২০১৯ সালে যখন নিয়োগের চিঠি হাতে আসে তখনও ভাবতে পারিনি এই পরিস্থিতির মুখোমুখি আমাদের হতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম লেখা পড়া করে পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া শেখাবো। শিক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন দেখে ছিলাম। সেটাই কি আমাদের অপরাধ ছিল?’’
কতদিন তাদের বসে থাকতে হবে তার কোন উত্তর তাদের কাছে নেই। তাদের সবার একটাই দাবি যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করুক এসএসসি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নিজে বলেছিলেন এসএসসি ২১ এপ্রিল এই তালিকা প্রকাশ করবে। কিন্তু তারা করেনি।
কাকদ্বীপের বাসিন্দা তন্ময় হালদার। ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ২০১৯ সালে সেও চাকরি পায়। পোস্টিং হয় মুর্শিদাবাদে। বাড়ি থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দুরের স্কুলে চাকরি পায় সে। সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যেন হঠাৎ করে অন্ধকার হয়ে গেলো সব কিছু। বাড়ির লোকরা জানে গতকাল রাত থেকে তন্ময় এবং বাকিরা এসএসসি ভবনের বাইরে বসে রয়েছেন তালিকার জন্য। তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা ছোট মেয়ে আছে, ও বার বার ফোন করে বলছে পুলিশের থেকে দুরে থাকতে।’’
কেন বলছে?
ও দেখেছে টিভিতে কসবায় কি ভাবে শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের লাঠি এবং লাথি পেটা করেছে পুলিশ।
Comments :0