খামখেয়ালি আবহাওয়ার কারণে ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প। বিগত কয়েক মাস পর্যাপ্ত বৃষ্টি না থাকায় গ্রীস্মের দাবদাহে পুড়ছিলো উত্তরবঙ্গ। নাভিশ্বাস উঠছিলো উত্তরবঙ্গবাসীর। তীব্র গরমের মধ্যেই ঝলসে গিয়েছে চা গাছের কাঁচা পাতা। সূর্যের তেজে সবুজ পাতার রং বদলে হয় কালচে লাল। গরমে উৎপাদন কম, সেইসঙ্গে পোকামাকড়ের উৎপাত। এই সবকিছুর প্রভাব পড়ছে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে। অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি দুটোই ক্ষতিকর চা গাছের জন্য।
এবার টানা বৃষ্টির ফলে চা গাছের পক্ষে পুরোপুরি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। উৎপাদন মার খাচ্ছে বৃষ্টির জলে। তবে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও ভারী বর্ষণে গাছের নিচে জল জমে আছে। পাতা তোলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। দিনের বেলা রোদের দেখা না পাওয়ায় চা গাছের ক্ষতির মুখে। অনাবৃষ্টি আর অধিক তাপমাত্রায় চা গাছে কুঁড়ি না আসায় উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছিল। এখন অতিবৃষ্টিতেও চায়ের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চা গাছের পরিচর্যা করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি চা গাছের জন্য ভালো, তবে লাগাতার বৃষ্টি ক্ষতিকর।
আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় চা গাছে লুপার ও হেলোপেলটিস সহ নানা ক্ষতিকারক পোকার উপদ্রব বেড়েছে। কীটনাশক স্প্রে করলে বৃষ্টির ঝাঁপটায় ও জমা জলে সব ধুয়ে যাচ্ছে। অবিরাম বৃষ্টিতে আলিপুরদুয়ার জেলায় ২৫-৩০ টি চা বাগান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার এই খাম খেয়ালিপনায় জুন থেকে উৎপাদন মার খাচ্ছে চায়ে। হাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, আরও কিছুদিন এই দুর্যোগ চলবে। ফলে জুলাই মাসেও চায়ের উৎপাদনে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
চা মালিক সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান চিন্ময় ধর বলেন, ‘‘জেলার ২৫-৩০টি চা বাগান জলমগ্ন। পলি, বালি ঢুকে বাগানগুলির ক্ষতি হয়েছে। জল জমে থাকায় মাটি নরম হয়ে চা গাছের শিকড় আলগা হচ্ছে।’’
বাগান মালিকরা জানিয়েছেন, ‘‘পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও কয়েক দিন ধরে রোদের দেখা নেই। জমা জলে চা গাছের গোড়ায় পচা রোগ দেখা দিচ্ছে। রোদ থাকলে এই পরিস্থিতি হতো না। এদিকে, তুলসীপাড়া, জয় বীরপাড়া ও আর্যমান সহ মাদারিহাট ব্লকের বেশকিছু চা বাগান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কালচিনির মাঝেরডাবরি চা বাগান থেকেও জমা জল নামছে না।’’
North Bengal Tea Garden
অতিবৃষ্টিতেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প
×
Comments :0