জানা অজানা
সবচেয়ে হিংস্র পাখি
তপন কুমার বৈরাগ্য
নতুনপাতা
আমরা জানি পাখির স্বভাব সাধারণতঃ শান্ত এবং ভীরু প্রকৃতির।কিন্তু হিমালয়ের
কোলে একধরনের পাখি বাস করে যাদের দেখতে অপূর্ব সুন্দর কিন্তু স্বভাবে এরা
পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে হিংস্র।এই পাখির চোখ দুটো দেখলে মনে হবে কেউ সযত্নে
তার চোখ দুটোতে কাজল পরিয়ে দিয়েছে।এ যেন ঈশ্বর নিজ হাতে এই পাখিকে
সৃষ্টি করেছে।এই পাখির নাম কাজল পাখি। ইংরাজিতে ব্রাউন শ্রাইক বলে।
এরা পরিযায়ী পাখি। শীতকালে এরা আমাদের বঙ্গে আসে। এদের মধ্যে একটা
বিশেষত্ব দেখা যায় প্রতি বছর একই পাখি একই জায়গায় আসে । এদের ওজন
৮০থেকে ১০০গ্রাম। ভারী সুন্দর চেহারার পাখি। এই পাখির আর একটা বৈশিষ্ট্য
এরা যে কোনো প্রাণী বা পশুর ডাক হুবহু নকল করতে পারে।বড় বড় পাখিরাও
এদের সাথে লড়াইয়ে পেড়ে ওঠে না।এরা কোনো একটা পাখি বা পশুর কন্ঠস্বর
হুবহু নকল করে ডেকে আনে।তারপর ধারালো নখ দিয়ে মাথায় ও ঘাড়ে
ঠোকর দিয়ে তাকে মেরে ফেলে। অনেক সময় ছোটছোট প্রাণীকে কাঁটাযুক্ত
গাছে আটকে রেখে তাকে মেরে ফেলে।যতোটা নিষ্ঠুর হওয়ার দরকার ততোটায় নিষ্ঠুরতার
পরিচয় এরা রাখে। মায়াবী দর্শন এই পাখি তাই জগতের সবচেয়ে নিষ্ঠুর পাখি।
এরা এতো হিংস্র যে ক্ষুধা না পেলেও কোনো প্রাণী বা পাখিকে মেরে রেখে
অন্য জায়গায় চলে যায়।এই কিলার বার্ড ইঁদুর ,টিকটিকি,ব্যাঙ,অন্যপাখিদের
মেরে খায়। এদের দেহের দৈর্ঘ্য ৩০থেকে ত৫ সেমি। এরা দ্রুত উড়তে পারে।
এরা ঘন্টায় ১০০থেকে ১২০কিমি পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে।এরা একা বা জোড়া
জোড়া থাকে। স্ত্রী পাখি একসাথে চার থেকে ছয়টা ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে
১৪থেকে পনেরো দিন বাচ্চা বের হয়।এক সাথে তিন চারটে
বাচ্চার জন্ম দেয়। কাজল পাখি কোনো বাসি খাবার খায় না।সদ্য পশু বা প্রাণী
মেরে সেই খাবার খায়।এই পাখি ছয়-সাত বছর বাঁচে।আজ পরিবেশ দূষণের
জন্য এই পাখি দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে।
Comments :0