বিদায়ী রাষ্ট্রপতি নতুন রাষ্ট্রপতিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেবেন, এই ছিল রীতি। ব্রাজিলের ভোটে পরাস্ত জাইর বোলসোনারো পালিয়ে গিয়েছেন দেশ ছেড়ে। রবিবার, বছরের প্রথম দিনে শপথ নেবার পরে লুলা দ্য সিলভাকে এই উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন এনি সৌজা। তাঁকে কেউ চেনে না, কেননা তিনি জঞ্জাল কুড়িয়ে। লুলার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ব্রাজিলের আদি অধিবাসীদের একজন, একজন প্রতিবন্ধী, এক কৃষ্ণাঙ্গ বালক। কী চান তিনি, কোনদিকে এগতে চান, শুরুর এই দৃশ্যেই তার ইঙ্গিত দিয়েছেন লুলা। শপথ অনুষ্ঠানের পরে ভাষণ দেবার সময়েও লুলা দেশের প্রান্তিক মানুষদের কথা বলেন, তাঁদের জীবনযন্ত্রণার কথা বলেন। এমনকি ভাষণের মাঝখানে ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা চাওয়া মানুষের কথা বলতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেন তিনি।
লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয় রাজধানীতে। ‘লুলাপালুজা’ কনসার্টে সাম্বার প্রবাদপ্রতিম মার্টিনহো দা ভিলা ছিলেন, ছিলেন দেশের নামকরা গায়করা। উৎসবের চেহারা নেয় এই শপথ অনুষ্ঠান। ‘ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসার জয়’ ব্যানারে ভরে উঠেছিল ব্রাসিলিয়ার রাস্তা। দক্ষিণপন্থী শাসনের অবসানের উদ্যাপনে পরিণত হয় তা।
লুলা তাঁর ভাষণে বলেছেন, বিধ্বস্ত ব্রাজিলকে পুনর্নিমাণ করতে হবে। সকলের ব্রাজিল। তাঁর পূর্বসূরির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার আচরণ হবে না জানিয়েও লুলা বলে দিয়েছেন, অন্যায়ের বিচার হবে। বিশেষ করে কোভিডের সময়ে যেভাবে গণহত্যা হয়েছে, তার তদন্ত হবে। আর, প্রথম দিনই জনতার প্রবল সমর্থনের মধ্যে ঘোষণা করেছেন, বোলসোনারোর আমলের বন্দুক রাখার আইন বাতিল করা হচ্ছে। আমাজন রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২০৩০-এ আমাজনে একটি গাছও কাটা হবে না।
শপথে হাজির ছিলেন ১৯ দেশের রাষ্ট্রপতিরা। লাতিন আমেরিকার ঐক্যের ছবি প্রতিফলিত হয়েছে, আবার জার্মানি, পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি, স্পেনের রাজাও হাজির ছিলেন। প্রয়াত ফুটবলার পেলে ও প্রাক্তন পোপের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
Comments :0