কবিতা
দ্রৌপদী
কৃত্তিকা ভট্টাচার্য্য
মুক্তধারা
বহ্নি সেদিন উর্ধ্বমুখী হয়ে গগন স্পর্শ করেছিল,
পন্ডিতের মন্ত্র বজ্র হয়ে জানান দিচ্ছিল,
"সে আসছে।"
ত্রিভুবন কাপিয়ে এক উচ্চাঙ্গ ধ্বনি
"অপেক্ষার অবসান, আর্যাবর্তের ভবিষ্যৎ ভূমিত হচ্ছে"
এক নতুন যুগের সূচনার শঙ্খধ্বনি,
পারিষদ সহ রাজা বিস্ময়ে বিমূঢ়।
যজ্ঞাগ্নির তেজে চক্ষু মুদিত,
বেরিয়ে এলো সে,"উজ্জ্বলকান্তি সুদর্শন যুবক"
যুবরাজের আগমন বিস্ময়কে উৎসবে পরিণত করে দিল,
রাজা ঘোষণা করলেন,"পাঞ্চাল প্রদেশে আবির্ভূত হয়েছে আদিত্য স্বয়ং,
পিতার অপমানের জবাব দিতে জন্ম তার,
পিতার প্রতিশোধ তার কর্ম,
পিতার আসন তার অধিকার
অগ্নিজাত পুত্রের নাম রাখলেন দৃষ্টদ্রুম্ন।"
সহসা আকাশ হতে ক্ষীণ তীব্র আলো ,
যজ্ঞের স্তিমিত আগুন শত গুণে গুণান্বিত করে,
আহ্বান করলো ভবিষ্যৎকে,
আনন্দের কলরোল মাত্রায় বাড়িয়ে দিল তার তীব্রতা,
আকাশবাণী কটাক্ষ করলো সময়কে,
মহাকালের রুদ্রবীনায় রাগ ভৈরবী ধ্বনিত হলো,
আবির্ভূত হলেন আর্যাবর্তের বীরাঙ্গনা
মহাকালের রুদ্রবীনায় রাগ ভৈরবী ধ্বনিত হলো,
প্রকৃতির অসামান্য রাগে ফেটে পড়ল ধরিত্রী,
মনীষীদের উদাত্ত ধ্বনি,
আবির্ভূত হচ্ছেন আর্যাবর্তের নতুন ভোরের আলো,
দ্রুপদরাজের সৌভাগ্য, তার রাজেশ্বরী
বিদ্যুৎ গর্জনের মাঝে
আবির্ভূত হলেন আর্যাবর্তের বীরাঙ্গনা
যজ্ঞাগ্নি সম্ভুতা কৃষ্ণাঙ্গি....
সভাগণ স্তব্ধ ....
রাজা নির্বাক,
মহাকালের রথের চঞ্চলতার মাঝে
সময়ের কুটিল হাসির হাতছানি,
জানান দিচ্ছে, নতুন পর্ব আগত।
মহারাজ তার সৌভাগ্যকে উপঢৌকানে দিলেন দশবিঘা পাথর,
আর দিলেন একটি মাত্র সূচ...
জন্ম নিলেন যাজ্ঞসেনী অগ্নিজ্যোতি,
স্বয়ং অগ্নি ... মানব রূপে , নারী রূপে,
ধরিত্রী পাক মুক্ত করতে এলেন দ্রৌপদী হয়ে.....
Comments :0