Strike July 9th

চলবে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই, দেশজুড়ে ধর্মঘটের পর বলছেন নেতৃবৃন্দ

জাতীয়

বুধবার যন্তর মন্তরে তপন সেন।

সংগ্রাম দীর্ঘস্থায়ী। ৯ জুলাই তার শুরু হলো। শ্রমিকের অর্জিত অধিকার রক্ষার সঙ্গে এই লড়াই জনতার সাংবিধানিক অধিকার রক্ষারও। সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের আরও বড় পর্ব দেখবে দেশ।
বুধবার সর্বভারতীয় সাধারণ ধর্মঘটের পর বিবৃতিতে এই লক্ষ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ১০ ট্রেড ইউনিয়ন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে ২৫ কোটি শ্রমজীবী ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। 
এদিন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মিছিল এবং সভা হয়েছে যন্তর মন্তরে। বক্তব্য রেখেছেন সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, এআইটিইউসি’র অমরজিৎ কৌর, আইএনটিইউসি’র অশোক সিং, এইচএমএস’র হরভজন সিং সহ নেতৃবৃন্দ।
এদিন ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন কয়লা, খনি শিল্প থেকে ইস্পাত, ব্যাঙ্ক, এলআইসি, পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ, টেলিকম, বন্দর শ্রমিকরা। যোগ দিয়েছেন চা, চট পরিবহণ শিল্পের শ্রমিকরা। উল্লেখ করার মতো যোগদান ছিল আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, মিড ডে মিলের মতো প্রকল্পের কর্মীদের, জানিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে বহুজাতিক সংস্থা, রেলের কর্মচারীরা সংহতি জানিয়েছেন। এক ঘন্টা কাজ বন্ধ রেখেছেন প্রতিরক্ষা কর্মীরা। 
গুরুতর প্রভাব পড়েছে বহু রাজ্যে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি রয়েছে আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাডু। কেরালায় সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ দেখা গিয়েছে ত্রিপুরায়। সংযুক্ত কিসান মোর্চা এবং খেতমজুর ইউনিয়ন অংশ নেওয়ায় প্রভাব পড়েছে গ্রামাঞ্চলে।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে শ্রমজীবীর অধিকার কেড়ে নেওয়ায় জনতার ক্ষোভ স্পষ্ট। ক্ষোভ মূল্যবৃদ্ধিতে, বেকারিতে। ক্ষোভ স্পষ্ট বৈষম্যে। দশ বছর দেশে শ্রম সম্মেলন হয়নি। ‘সহজে ব্যবসা’ নীতিতে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে শ্রমিকের অধিকার। মালিকপক্ষের অন্যায়কে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না আর। বরং দাবির পক্ষে আন্দোলন করলেই শ্রমিককে জেলে ঋুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্ষোভ তার বিরুদ্ধে। 
দেশজুড়ে বিক্ষোভে শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের ব্যাখ্যা, ন্যূনতম মজুরির আইনি ব্যবস্থা ধ্বংস করা হচ্ছে। শ্রম আদালত গুটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সুরক্ষিত কাজ নেই। সে কারণে শ্রম কোড ঘিরে ক্ষোভ। যে দেশে জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স ৩৫’র কম সে দেশেই বেকারির হার সর্বোচ্চ ২০-২৫ বয়সসীমায়। 
নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শ্রমজীবীকে ভোটদানের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটদানের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। অন্য রাজ্যেও তা করা হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার করে  বিরোধিতার স্বর দমন করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে সরাসরি সেই লক্ষ্যে আনা হয়েছে জনসুরক্ষা বিল। জনতা এই পদক্ষেপ ভালোভাবে নিচ্ছে না। তার প্রমাণ এদিনের ধর্মঘটে সোচ্চার অংশগ্রহণ। দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেচে দিয়ে স্বনির্ভরতা ধ্বংসের নীতি মেনে নিচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন যে দীর্ঘস্থায়ী লড়াইয়ে আরও বড় প্রতিরোধের কর্মসূচি নেওয়া হবে শ্রমজীবী বিরোধী এবং জনবিরোধী নীতি প্রত্যাহারে বাধ্য করতে।

Comments :0

Login to leave a comment